ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

জানালেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান

রাষ্ট্রপতি বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

রাষ্ট্রপতি বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত

রাষ্ট্রপতি বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত

রাষ্ট্রপতি পদে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের থাকা না থাকার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। 
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বহুল আলোচিত রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করা হয়।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতেই বিষয়টাতে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
রাষ্ট্রপতির ভাগ্য নিয়ে দেশজুড়ে যখন ব্যাপক আলোচনা চলছে তখন এই সিদ্ধান্ত এলো।  বঙ্গভবন ঘেরাওসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি করে আসছিল। এমন পরিস্থিতিতে গত বুধবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে দলটি বলেছে, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রের পদ শূন্য হলে তা রাষ্ট্রকে সংকটে ফেলবে এবং সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে, যা জাতি চায় না।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বুধবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিল ও রাষ্ট্রপতির অপসারণের জন্য জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও রাষ্ট্রপতি শপথ ভেঙেছেন এবং পদে থাকার যোগ্য নয় দাবি করলেও রাষ্ট্রপতির অপসারণে জোর দাবি জানায়নি। ফলে ছাত্র-জনতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে কিছুটা মতভেদ তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ইস্যুতে ফের বসতে চাচ্ছে।
এর আগে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় আড়াই মাস পরে একটি ম্যাগাজিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই।
এরপরে গত সোমবার আইন উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, উনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জোরেশোরে উঠতে শুরু করে। পদত্যাগের দাবিতে, ছাত্র-জনতার বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের মতো ঘটনাও ঘটে। 
গত মঙ্গলবার এই দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়। ওই রাতে এক পর্যায়ে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর মধ্যে গত বুধবার বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের তিন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। বিএনপি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। দলটি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।

×