ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

বিলাসিতা নাকি অন্য কিছু ছেড়ে রাষ্ট্রপতিকে নিজের পথ দেখতে বললেন হাসনাত

বিশ্ববিদ্যালয় রি‌পোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ২১ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ২৩:৪১, ২১ অক্টোবর ২০২৪

বিলাসিতা নাকি অন্য কিছু ছেড়ে রাষ্ট্রপতিকে নিজের পথ দেখতে বললেন হাসনাত

বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে রাষ্ট্রপতিকে নিজের পথ দেখতে ব‌লে‌ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তি‌নি ব‌লেন, চুপ্পু সাহেবকে বলতে চাই, এখনও সময় আছে বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে আপনার রাস্তা বেছে নিন। ইতোমধ্যে খুনী হাসিনার সংবিধান যদিও আমরা মানি না, সেই সংবিধানের শপথভঙ্গ করেছেন। শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার কথা ভাবলে ভুল ভাবছেন। শেখ হাসিনার পুনর্বাসন এই বাংলার মাটিতে আর কোনোদিনও হবে না। খুনী হাসিনাকে বাংলায় আসতে হবে তাদের বিচারের মুখোমুখী করা হবে, ফাঁসিতে তাকে ঝুলতে হবে। 

 

 

 

সোমবার রা‌তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মশাল মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হাসনাত এ সব কথা বলেন। 

উপ‌দেষ্টা আ‌সিফ নজরুল‌কে উ‌দ্দেশ‌্য ক‌রে হাসনাত ব‌লেন, আমি আসিফ স্যারসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, যদি ছাত্রদেরকে আড়াই মাস পরে রাজু ভাস্কর্যে এসে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য দাঁড়াতে হয় তাহলে আপনাদের কাজটা কী? আসিফ স্যার আপনার উপর শিক্ষার্থীরা ভরসা রেখেছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রতি পদে পদে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। দ্রুততম সময়ে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, ছাত্রলীগের সবাইকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করতে হবে।

তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনে যারা অসহযোগিতা করছেন, আপনারা ফ্যাসিস্টের সঙ্গে আঁতাতের কথা ভাবছেন। আপনারা ভুল করছেন। আপনাদের বিকল্প খুঁজতে আমরা দ্বিধা করব না। আমরা প্রয়োজনে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্স গঠন করব। এখনও সময় আছে, সরকারকে সহায়তা দিতে হবে।

ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের বিষ‌য়ে ব‌লেন, 
ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের কবর রচিত হয়েছে ৫ আগস্ট। তারা ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করুক ছাত্রলিগের কোনোদিন বাংলাদেশে পুনর্বাসন হবে না। ছাত্রলীগের মাথাচাড়া দেওয়া নেতাকর্মীদের বলতে চাই, ১৭ জুলাই সবলীগকে ক্যাম্পাস থেকে উৎখাত করা হয়েছে। বাংলাদেশে কোনোপ্রান্তে মাথাচাড়া দিলে ভুল ভাবছো, তোমাদের কোনোভাবে এই বাংলাদেশে পুনর্বাসন হবে না।

প্রশাসন ও মিডিয়াকে হুশিয়ার করে বলেন, আপনারা যদি মনে করেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাথে আঁতাত করবেন তাহলে ভুল ভাবছেন। ছাত্র-জনতা হাসিনার বিকল্প বেছে নিয়েছে, আপনাদের বিকল্পও বাছাই করতে দ্বিধা করবে না। অনেক মিডিয়া যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের শ্রুতি-বন্দনা করে তার হাতকে শক্তিশালী করেছে। সেই ফ্যাসিস্ট মিডিয়া আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। কলাম লিখতে শুরু করেছে। সেই শ্রুতি-বন্দনা এবং কলাম লেখা ৫ আগস্ট শেষ হয়ে গেছে। ফ্যাসিস্ট মিডিয়ারও পুনর্বাসন হবে না।

সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের কবর দিলেও এখনো তাদের মূলোৎপাটন করতে পারিনি। এই বাংলার মাটিতে এখনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে। সাহাবুদ্দিন চুপ্পু যিনি স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন আমরা তার পদত্যাগের দাবি জানাই। অন্যথায় এই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আরও কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। এসময় তিনি গত ১৬ বছরে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পদচ্যুত করার জোর দাবি জানান। 

বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, হাসিব আল ইসলাম,  সানজিদা আফিফা অদিতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, আব্দুল হান্নান মাসুদ, বক্তব্য রাখেন।   

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

ফুয়াদ

×