ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

এবার মেট্রোতে কাপলদের রোমাঞ্চ,লজ্জায় যাত্রীরা

প্রকাশিত: ২০:১৬, ২১ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ২০:৩১, ২১ অক্টোবর ২০২৪

এবার মেট্রোতে কাপলদের রোমাঞ্চ,লজ্জায় যাত্রীরা

ফাহিম আল ফারাবি নামের এক যাত্রী মেট্রো রেলের একটি কমিউনিটি গ্রুপে লিখেছেন, ‌‌‘ঘুরতে যাওয়া মানুষজন নিয়ম-কানুনের কোনো তোয়াক্কাই করে না, বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে। মেট্রো ইদানিং নোংরামির চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। কিছু কাপল এমনভাবে ঢলাঢলি করে যে সাধারণ মানুষই লজ্জায় পড়ে যায়।

 

 

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আজ মিরপুর-১১ থেকে বিকেল ৪:৩০-এ মেট্রোতে উঠলাম। সিটে বসা এক কাপলকে দেখলাম। মেয়েটি শাড়ি পরে ছিল কিন্তু শাড়িটি এমন বাজেভাবে পরেছিল যে বাধ্য হয়ে ভিড় ঠেলে দূরে গিয়ে দাঁড়াতে হলো। এর মধ্যে কাপলটির ঢলাঢলি শুরু হলো। মেয়েটি লিটারেলি ছেলেটির গায়ে শুয়ে পড়ছিল।

 

 

ছেলেটিও বারবার মেয়েটিকে চুমু দিচ্ছিল এবং জড়িয়ে ধরে রাখছিল। তাদের পাশেই ছিল একটি ফ্যামিলি, বাবা-মা আর ৭-৮ বছরের একটি ছেলে। ফ্যামিলিটির অপ্রস্তুত অবস্থায় এক ভদ্রলোক বাধ্য হয়ে কাপলটিকে ধমক দিয়ে সোজা হয়ে বসতে বলেন। তখন মেয়েটি ভদ্রলোকের সঙ্গে তর্ক শুরু করে। পরে সামনে থাকা এক মহিলা ও আরও কয়েকজন প্রতিবাদ করলে তারা চুপ হয়ে যায়।’

ফার্মগেটে নামতে গিয়ে ফাহিম আরও দেখেন, ‘সিঁড়ির উপরে এক কাপল প্রায় জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে। তারা অর্ধেক সিঁড়ি ব্লক করে গল্প করছিল। ভাই, রোমান্স করতে চাইলে রুমে যান। ম্যারিড না হলে কাপল রেস্টুরেন্টে যান। বাজেট না থাকলে অন্তত কাশবনের চিপায় যান, কিন্তু মেট্রোটা ছাড়েন। এটা একটা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, আপনার রোমান্সের জায়গা নয়।’

 

 

তার পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় অনেকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। কেউ বলছেন, ‘আমি আজ গালি দিয়েছি।' কেউ আবার প্রতিবাদ করার কথা বলছেন। কেউ আফসোস করে বলছেন, 'দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু মানুষ বাড়েনি।' আবার অনেকে বলছেন, 'তাদের ছবি তুলে ফেসবুকে এক্সপোজ করে দিতে।’

হোসাইন আসলাম লিখেছেন, ‘এরা দিল্লি, নিউইয়র্ক, ইউরোপের মেট্রোগুলোর ভিডিও দেখে এগুলো করতে শুরু করেছে। এরপরে গান বাজনা করবে, অ্যাটেনশন সিক করার জন্য আরও নতুন উপায় বের করবে।’

জাবের আলী লিখেছেন, ‘অতি আধুনিক হলে যা হয়।’ তবে সাব্বির হোসেন লিখেছেন, ‘ভালোবাসা তো স্বর্গীয়।’ আবার এমএইচ সাকিব লিখেছেন, ‘দিন দিন বেহায়াপনা চরমে উঠছে, মানুষের লজ্জাও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।’

মো. সানি লিখেছেন, ‘আসলেই, আমি ও প্রায় দেখি। এদের কি কমন সেন্স বলতে কিছু নেই?’

নাবিল লিখেছেন, ‘বললেই তো হেরে রেরে করে তেড়ে আসবেন! আরে ভাই, আপনি ডিসাইড করার কে? ঢলাঢলি আর চুমাচুমি কি আইন দ্বারা নিষেধ নাকি এদেশে? আপনার ভালো না লাগতেই পারে! ইগনোর করেন। অন্যকে সংযত হতে বলার আপনি কে ভাই?’

শাব্বীর আহমাদ পলাশ লিখেছেন, ‘এনাউন্সমেন্ট করা প্রয়োজন-দয়া করে ঢলাঢলি করবেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে এটি রেকর্ড হচ্ছে। ঢলাঢলি করলে ৫০০ টাকা জরিমানা।’

খালিদ হাসান আসিফ লিখেছেন, ‘মেট্রোতে আশপাশের দিকে মন না দিয়ে ফোন টিপেন, বই পড়েন, নইলে জীবন নিয়ে চিন্তা করেন। সুখী থাকবেন।’

সাইফ খন্দকার লিখেছেন, ‘অন্য পুরুষ থেকে নিরাপত্তার নামে গার্লফ্রেন্ডকে কচলাতে দেখার দৃশ্য আসলেই অনেক ঘটছে। আমি কোনো প্ল্যাটফর্মে এটা নিয়ে কথা তুলি নাই কারণ ভেবেছিলাম আমি একজন খ্যাত।’

সুমন লিখেছেন, ‘লাইনে টিকেট কাটতে একজন দাঁড়ায়, আরেকজন পেছন থেকে বা পাশে জড়িয়ে থাকে। মাঝে মাঝে একজন আরেকজনের গায়ে হাত দেয়। কিছু বললেই রুখে উঠে। অসভ্যতার চরম সীমায় চলে গেছে এই প্রজন্ম। এর জন্য দায়ী এদের বাবা-মা।’

এসকে লোপা লিখেছেন, ‘সহমত। আমাদের উচিত সবাই মিলে প্রতিবাদ করা, তাহলে ঐসব নোংরা পরিবারের সন্তানরা এসব করার সাহস পাবে না। আসুন এক হই, কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে সমর্থন করি।’

 

ফুয়াদ

×