ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা

আলোচনা করেই ভোটের তারিখ

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:১২, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

আলোচনা করেই ভোটের তারিখ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গণফোরাম নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন

চতুর্থ দফা সংলাপে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা। একই সঙ্গে তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভালো মানুষকে বাছাই করার প্রস্তাব দিয়েছেন। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুন্দর প্রশাসন চালানো, ন্যায় বিচার নিশ্চিত এবং নিত্যপণ্যের বাজার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলো।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শনিবার কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ শেষে ব্রিফিংকালে প্রতিনিধি দলের নেতারা এসব কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন। 
বৈঠক সূত্র জানায়, নির্বাচন সম্পর্কে রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছয়টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট আসার পর পুনরায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবে এবং তার আগেই নির্বাচনের রোডম্যাপ জানানোর চেষ্টা করবেন। সংস্কারের পর দ্রুত নির্বাচন চায় গণফোরাম ॥ রাষ্ট্র সংস্কারের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চেয়েছে গণফোরাম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপের পর এ কথা জানিয়েছেন দলটির সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু।
সংবিধান, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সংলাপে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন কথা বলেছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজারে পরিস্থিতি নিয়ে জোর দিয়েছি। সিন্ডিকেটকে অবশ্যই ভাঙতে হবে।’
শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি বলেন, পতিত সরকার ও তাদের বিদেশী এজেন্টরা বাংলাদেশটাকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এ থেকে উদ্ধারের জন্য আমাদের সবাইকে জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গণফোরাম অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায় জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে একমত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ সরকার জনগণের সরকার। এ সরকারকে রক্ষার স্বার্থে অর্থাৎ আমাদের নিজেদের রক্ষার স্বার্থে ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।
শনিবার ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের সংলাপে বসছেন। এতে প্রথমে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন গণফোরামের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান মোস্তফা মহসীন মন্টু, কো-চেয়ারম্যান এসএম আলতাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, সদস্য এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মোশতাক আহমেদ ও সুরাইয়া বেগম। 
বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আমরা সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করব। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) যে কোনো বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা চাইবেন। আমরা যেটা উপলব্ধি করব, সেটাই পরামর্শ দেব। জনগণের জন্য দরজা খোলা আছে বলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন। তিনি বলেন, পাচার হয়ে যাওয়া লাখো কোটি টাকা ফেরত আনতে হবে। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। সেটা উত্তরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সেটা কোনো দলীয় চিন্তা-চেতনা নয়, জাতীয় ঐকমত্যের চিন্তায় এগোতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে, এটার জন্য সার্চ কমিটি বা কিছু করার প্রয়োজন আছে, ভালো লোক নিয়োগ দেওয়ার দরকার আছে। যাতে অতীতের মতো কোনো সমস্যা না হয়।
রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আমরা কোনো তারিখ উল্লেখ করিনি। বলেছি সংস্কার শেষে অতিদ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। তবে সংস্কার শেষ না হলে সব একই হবে। নির্বাচনের আগে থাকি রাম, নির্বাচনের পরে হই রাবণ। ওই ধরনের নির্বাচন কমিশন চাই না। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন কমিশন চাই। সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে আলোচনা করে লিখিত আকারে দেব।
সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে গণফোরাম সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, বৈঠকে নির্বাচন ব্যবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারসহ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সংস্কারসহ বেশকিছু ব্যাপারে পরমার্শ দিয়েছি। সরকার সেটা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে। সরকার গঠিত কমিশনের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব কয়েক দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে দেওয়ার কথা জানান মিজানুর রহমান।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ ২৩ দফা প্রস্তাব এলডিপির ॥ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ নতুন করে আরও ২৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মতো আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) অলি আহমদ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে শনিবার বিকেল সোয়া ৪টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সংলাপে লিখিত ও মৌখিক প্রস্তাব তুলে ধরার কথা উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, দুই দফা সংলাপের প্রথমবারে ১০৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দ্বিতীয় দফায় এবার আরও ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। এসব প্রস্তাব কাউকে সুবিধা দেওয়ার জন্য নয়, কাউকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য নয়, দেশের জনগণের জন্য দিয়েছি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুন্দর প্রশাসন চালানোর জন্য, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য, নিত্যপণ্যের বাজার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে।
জুলাই-আগস্টে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৮ কোটি মানুষ যুদ্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা পুলিশসহ প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, জনগণের সঙ্গে মুখোমুখি করে দিয়েছে, দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে, আমাদের হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে হতাহত করেছে।
অলি আহমদ বলেন, আমরা মনে করি, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তখন আমরা তাদের নিষিদ্ধ করেছিলাম। তা হলে আজ কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আমরা আবার বলেছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা সব কিছু করেছে। শেষ পর্যন্ত জনতার চাপে টিকে থাকতে পারেনি, ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়েছে, চোর কী করে ভালো থাকে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জামায়াত নেতাদের তো ফাঁসি হয়েছে। এখন ওদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) ফাঁসি দিতে হবে। জামায়াতকে তো ফাঁসি দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দেন। এটা আপনাদের দায়িত্ব। এ ছাড়া দুর্নীতিবাজদের ধরা, জনগণের লুণ্ঠন করা টাকা ফেরত আনা, অভ্যুত্থানের সময় হত্যায় অংশ নেওয়াদের বিচারের আওতায় আনা এবং সংস্কার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এলডিপি প্রধান অলি আহমদ।
সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার দাবি সমমনা জোটের ॥ জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেছেন, সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, এর মধ্যে একটা নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে বলেছি সরকারকে। সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, আপনার টিম দিয়ে বাজার মনিটরিং করেন। এখানে সিন্ডিকেট আছে তা ভাঙার চেষ্টা করেন। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নতি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
সংবিধান সংস্কারের মালিক জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার বলে বৈঠকে জানান জোটের নেতারা। ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, সংবিধানের মেজর পরিবর্তন করবে নির্বাচিত সরকার। আপনারা তা করবেন না। অর্থ পাচারে জড়িত ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডি, পরিচালকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় জোটটি।
আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে এনডিএম ॥ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে আমরা বলেছি আমরা বিশ্বাস করি, ২০২৫ সালের জুন বা জুনের পরেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব এবং ওনাদের চিন্তা-ভাবনা প্রয়োজন। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবেন এবং আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ববি হাজ্জাজ বলেন, নির্বাচন সম্বন্ধে আমাদের জানিয়েছেন ছয়টি কমিশনের রিপোর্ট আসার পর প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে আরেকবার সংলাপে বসবেন। কমিশন যেসব সংস্কার প্রস্তাব করবে, সেগুলো এই সরকার করবে নাকি নির্বাচিত সরকার করবে, সে বিষয়ে আমাদের মতামত জানতে চাইবেন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তারা নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবেন এবং তার আগেই নির্বাচনের রোডম্যাপ জানানোর চেষ্টা করবেন। আমি আস্থা রাখি আজকে প্রধান উপদেষ্টা যে কথাগুলো বলেছেন, সে মোতাবেক সামনে কাজগুলো হবে এবং সামনে সুন্দরভাবে একটি নির্বাচন আমরা দেখতে পাব।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদেও সংস্কার চায় লেবার পার্টি ॥ লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, আমরা বলেছি যতো সংস্কার করুক না কেন, সবার আগে সংস্কার করতে হবে উপদেষ্টা পরিষদের। এ পরিষদের হাতেগোনা কয়েকজনের সফলতা ছাড়া বাকি সবাই ব্যর্থ। তাই ব্যর্থদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের ছাত্ররা ভালো করেছে (নাহিদ ও আসিফ)। আমরা ভেবেছিলাম তারা ভালো করবে না। কিন্তু বড় বড় সাবেক সচিব, উপদেষ্টাদের চেয়ে তারা ভালো করেছে। আমরা আলী ইমাম মজুমদারের ব্যাপারে বলেছি। তাকে অপসারণ করতে হবে। আলী ইমাম মজুমদার প্রশাসনে আওয়ামী লীগদের বেছে বেছে নিয়োগ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ক্ষমতা নেওয়ার পরে ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসনের অনেকগুলো কথা বলেছেন, সুপ্রদীপ চাকমা শপথ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী।
তিনি বলেন, বিভিন্ন এনজিও প্রধানদের এনে এটা একটা এনজিওগ্রাম সরকার করা হয়েছে। এখানে যারা যোগ্য, কর্মঠ তাদের আনতে হবে। আর শেখ হাসিনা যেমন গণহত্যাকারী, জাতীয় পার্টি-মহাজোটের দলগুলো শেখ হাসিনার সমপরিমাণ অপরাধী। এ জন্য জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের আবেদন জানিয়েছি।
অন্যের দায় বঙ্গবন্ধুর ওপর চাপানো ঠিক নয়-বাংলাদেশ জাসদ ॥ বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেছেন, সম্প্রতি ওনারা বঙ্গবন্ধু ও ৭ মার্চ নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং তা গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমরা বলেছি, শেখ হাসিনার সরকারের পারিবারিক কর্মকাণ্ডের দায় তাঁর। শেখ হাসিনা সরকারের ভুলত্রুটির দায় বঙ্গবন্ধুর ওপর চাপানোর যৌক্তিকতা নেই। তাই আমরা মনে করি, উপদেষ্টা পরিষদের বক্তব্য সংশোধন করা উচিত।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ ছাড়াও শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পার্টি-বিজেপি (পার্থ) ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে অন্তর্বর্র্তী সরকার তিন দফা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে।

×