ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

বিদ্যুৎখাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চার দাবি

প্রকাশিত: ২০:২৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

বিদ্যুৎখাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চার দাবি

সংবাদ সম্মেলন।

অস্থিতিশীল পল্লী বিদ্যুৎখাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কর্মকর্তাদের নামে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়াসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। 

দাবিগুলো হলো- 

১. আরইবি কর্তৃক সৃষ্ট অস্থিতিশীল পল্লী বিদ্যুৎ খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে মামলা প্রত্যাহার করে ২৪ জনের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া ও স্ট্যান্ড রিলিজ এবং সংযুক্ত দুইজনকে পদায়ন করা। 

২. গ্রাহকের নিকট জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য সমিতি ও বোর্ড সংস্কার করে একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান করা এবং স্থায়ী পদের বিপরীতে চুক্তিভিত্তিকদের নিয়মিত করা। 

৩. সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র সমন্বয়কসহ স্বাধীন কমিশন গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা। 

৪. আরইবির দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা। 

সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘১৭ অক্টোবর আরইবি কর্তৃক উস্কানি মূলক পদক্ষেপ হিসেবে ৩১ জন কর্মকর্তাকে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া, মামলা দায়ের ও কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে অস্থিরতা তৈরি হয়। বর্তমানেও বিভিন্ন সমিতিতে কর্মকর্তাদের  মাঝে গ্রেফতার আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দেওয়ার জন্য এই পরিস্থিতির পরিত্রাণ প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘দুই দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা  বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখেই আন্দোলন করে আসছিলাম। আলোচনার ও অহিংস কর্মসূচি মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ের সচেষ্ট ছিলাম। আগামীকাল রবিবারও প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলোর সমাধান করা হবে। কিন্তু এরই মধ্যে কর্মসূচি প্রত্যাহার করার পরেও আরইবি কর্তৃক সংস্থার চাকরিবিধির বাইরে গিয়ে কোন প্রকার তদন্ত, কারণ দর্শানো বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হয়রানি করা দু:খজনক। বর্তমানে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আমাদের অনেক কর্মকর্তারা স্টেশনে অবস্থান করতে পারছে না। এতে করে আবারও গ্রাহক ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মূলত আরইবির স্বেচ্ছাচারি মনোভাবের কারণেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা পবিস-১ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার  তামজিদুল ইসলাম বলেন, ‘১৭ তারিখে অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য আমরা গ্রাহকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তবে পরিস্থিতির পেছনের কারণ জনগণ এবং সাধারণ গ্রাহকদের অনুসন্ধান করার জন্য আমরা অনুরোধ করব। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আরইবি'র সরবরাহ করা নিম্নমানের মালামাল ও জনবল সংকটের কারণে বেশিরভাগ গ্রাহক হয়রানির শিকার হন। কিন্তু এর দায়ভার এসে পড়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা সমিতির উপর। অথচ ঝড়-বৃষ্টি অথবা যেকোনো দুর্যোগে তড়িৎ পদক্ষেপ নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে মাঠ পর্যায়ের সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ভুতুড়ে বিল, ত্রুটিপূর্ণ লাইন ব্যবস্থা সবই মূলত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতির কারণে ঘটে থাকে। অথচ এইসব নিয়ে কথা বলার কারনেই আমাদের আজ হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’

বক্তারা বলেন, ‘প্রকৃত সত্য মানুষের সামনে আসা উচিত শহর ও গ্রামের বিদ্যুৎ বৈষম্য নিরসন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও উন্নত গ্রাহক সেবার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সংস্কার প্রয়োজন। সরকারের কাছে আবেদন, প্রকৃত সত্য আড়াল করে কারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনুন। নিরীহ  পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদ ও বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করুন।’

সংবাদ সম্মেলনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এম হাসান

×