ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

গণহত্যায় নিহতদের পরিবার পাবে ৩০ লাখ টাকা

ঈদ ও পূজায় ছুটি বাড়ল ॥ উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:১৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ঈদ ও পূজায় ছুটি বাড়ল ॥ উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত

ঈদ ও পূজায় ছুটি বাড়ল

ঈদুল ফিতর ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন ও দুর্গাপূজায় ২ দিন করে ছুটি বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জন্য ২৬ দিন সরকারি ছুটি অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও গণমাধ্যম সংস্কারসহ আরও চারটি কমিশন করা হয়েছে। পাশাপাশি জুলাই গণহত্যায় নিহতদের প্রতি পরিবারকে ৩০ লাখ করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ ছাড়া চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপদেষ্টা পরিষদের কাছে জমা হয়েছে। এটি আরও পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে ঈদুল ফিতরে ৫ দিন ও ঈদুল আজহায় ৬ দিন এবং দুর্গাপূজায় ২ দিনসহ ২০২৫ সালের জন্য মোট ২৬ দিন সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আগামী বছর সাধারণ ও নির্বাহী আদেশে এই ছুটি থাকবে। এর মধ্যে ৯ দিন পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শুক্রবার ৫টি ও শনিবার ৪টি)। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দুই ঈদে সাধারণ ছুটি একদিন করে থাকবে। আর ঈদের আগে, পরে মিলিয়ে বাকি দিনগুলো নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাধারণ ছুটি থাকবে বিজয়া দশমীর দিন। তার আগে নবমীর দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকবে। বর্তমানে ঈদের ছুটি তিনদিন। তবে কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে তা বাড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়া এ বছর পূজা উপলক্ষে বর্তমান সরকার নির্বাহী আদেশে ছুটি একদিন বাড়িয়েছিল।
২০২৫ সালের ২৬ দিনের ছুটি অনুমোদন ॥ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলা একাডেমির ১৪৩১-১৪৩২ বঙ্গাব্দের তারিখ সংবলিত বর্ষপঞ্জি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধর্মীয় পর্বসমূহের তালিকা, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরবি মাসের প্রথম তারিখ ও ইসলামি পর্বসমূহের তালিকা এবং ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ছুটির তালিকা অনুসরণপূর্বক ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় দিবস ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে ১২ দিন সাধারণ ছুটি।

এ ছুটির মধ্যে পাঁচটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন (৩টি শুক্রবার ও ২টি শনিবার)। বাংলা নববর্ষ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে ১৪ দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি; এর মধ্যে ৪টি সাপ্তাহিক ছুটির দিন (২টি শুক্রবার ও ২টি শনিবার)। ধর্মীয় পর্ব উপলক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বছরে অনধিক ৩ দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগের জন্য ধর্মীয় পর্বসমূহের বিবরণ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে কর্মরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি বা অনুরূপ সামাজিক উৎসব উদ্যাপন উপলক্ষে ২ দিন ঐচ্ছিক ছুটি। এ ছুটির মধ্যে ১টি সাপ্তাহিক ছুটির দিন (১টি শনিবার)। ২০২৫ সালের জন্য ১২ দিন সাধারণ ছুটি ও ১৪ দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব করা হয়েছে অর্থাৎ প্রস্তাবিত মোট ছুটি (৯ দিনের সাপ্তাহিক ছুটি ৫টি শুক্রবার ও ৪টি শনিবার ব্যতীত) ২৬-০৯=১৭ দিন। উল্লেখ্য, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের অনুমোদিত মোট ছুটি (২ দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ব্যতীত) ছিল ২২-০২=২০ দিন।
স্বাস্থ্য ও গণমাধ্যম সংস্কারে কমিশন ॥ বিভিন্ন খাতের সংস্কারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরও চারটি সংস্কার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এগুলো হলো- স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার ও নারী অধিকার বিষয়ক কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সংস্কারের জন্য আরও চারটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বাস্থ্য কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবে জাতীয় অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ খান, শ্রমিক অধিকার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, গণমাধ্যম কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কামাল আহমেদ, নারী অধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শিরিন পারভীন হক।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কাজের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত কী হয়, পরবর্তীতে সেটি জানানো হবে। শিক্ষা কমিশন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 
নিহতের পরিবার পাবে ৩০ লাখ টাকা ॥ জুলাই গণহত্যায় নিহতদের প্রতি পরিবারকে ৩০ লাখ করে টাকা দেবে সরকার। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক প্রসঙ্গে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। মাহফুজ বলেন, প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে সহায়তার জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। সাত সদস্য বিশিষ্ট এ ফাউন্ডেশনের প্রধান হলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাধারণ সম্পাদক হলেন শহীদ মুগ্ধ’র ভাই স্নিগ্ধ।

×