ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

আমদানিকৃত হাজার কোটি টাকার সার নষ্ট

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বিএডিসি

প্রকাশিত: ২১:৫২, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বিএডিসি

নষ্ট সার

বাংলাদশে কৃষি উন্নয়ণ কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আমদানি করা কয়েক হাজার কোটি টাকার সার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ সারের বস্তা পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। 

অভিযোগ উঠেছে, গত ১৫ বছর যাবৎ কৃষি মন্ত্রণানালয় ও বিএডিসির কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে সিন্ডিকেট অনিয়মতান্ত্রিকভাবে হাজার কোটি টাকার সার আমদানী করে। যার অধিকাংশই খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। 

এ অবস্থায় সার আমদানীতে দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত বিএডিসির সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দাখিল করেছেন বিএডিসির বৈষম্য ও দুর্নীতি বিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

অভিযোগ উঠেছে, এই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবৎ প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে বিদেশ থেকে অতিরিক্ত সার আমদানি করে অযত্নে ফেলে রেখে নষ্ট করছে। মুন্সিগঞ্জের মোক্তারপুর ঘাটে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ বস্তা পঁচা-গলা সার পড়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্নি এলাকার গুদাম রক্ষকদের সাথে দফা-রফা করে ওই সার পাঠিয়ে দেওয়া প্রস্তুতি চলছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

বিএডিসির কর্মচারীর দুদকে দাখিল করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন যাবৎ কৃষি মন্ত্রনালয়ের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুর্নীতি অব্যাহত থাাকায় হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের লোপাট হয়েছে এবং সাধারণ কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। 

সারা বছর খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়েছে বিএডিসির আমদানিকৃত লাখ লাখ বস্তা নন-ইউরিয়া সার। আসন্ন বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে পচাঁ সার শুকিয়ে ক্রসিং করে নতুন বস্তায় ভরে বিএডিসি গুদামে পাঠাচ্ছেন সংশ্লষ্টি পরবিহণ ঠিকাদাররা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি সেক্টরও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

দুদকের দায়ের করা অভিযোগে আরো বলা হয়, সারা দেশের বিএডিসির গুদামগুলোর ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৪০ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন সারের। অথচ প্রতিবছর বিএডিসি আমদানী করে ২০ থেকে ২২ লক্ষ মেট্রিক টন সার। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত সার আমদানি করার কারণে সময় মতো সার পৌঁছে দিলেও গুদামে জায়গার অভাবে তারা পুরো সার বুঝে নিতে ব্যর্থ হয়। এখনো ২-৩ লাখ বস্তা পঁচা-গলা সার মুন্সিগঞ্জে মোক্তারপুর ঘাটে পড়ে রয়েছে।
 
অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, বিএডিসির সাবেক চেয়ারম্যান অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সার ও বীজ আমদানী মজুত ও টেন্ডার পাইয়ে দিতে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ে ডেপুটেশনে থাকা এক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে ব্যবহার করতেন। তারা ওপর মহল সামলাতেন। বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী সরকারের হয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএডিসিতে সিন্ডিকেট করে সার নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন এ দুজন। 

ফজলু/ শহিদ

×