ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

বিশেষ ক্ষমতা আইনে সিন্ডিকেটে জড়িতদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা শ্রম উপদেষ্টার

দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:২৭, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া

দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে এবার হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে সিন্ডিকেট করছে, তাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করার ঘোষণা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে। যেসব কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করছে, আমরা তাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করব। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য আমরা কাজ করছি।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন, আমরা একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে অনেক কিছুই জড়িত। বন্যার কারণে শাকসবজির খেত নষ্ট হয়ে গেছে এবং সেই কারণে চাহিদা এবং জোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের একটা বড় প্রভাব রয়েছে। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য আমরা কাজ করছি।

কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনকে দুর্বল করা হয়েছে। করপোরেটদের সঙ্গে আগের সরকারের একটা যোগাযোগ থাকার কারণে এটাকে এত দুর্বল করা হয়েছে যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবেদন আসে যে অভিযান হয়, সেখানে তিন হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু এটাতো ইফেক্টিভ না।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, আগে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেল দেওয়ারও ক্ষমতা ছিল আইনে। ব্যাপারগুলোকে এমনভাবে নষ্ট করা হয়েছে এটা টাইম নেবে একটু, এই আইন সংশোধন ও শক্তিশালী করতে। কিন্তু এর আগে আমরা ভাবছি যে আমাদের তো হার্ডলাইনে যেতে হবে। না হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।  
মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া অনেক তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছেন, যারা সরাসরি উৎপাদকের কাছ থেকে পণ্য এনে ঢাকায় বা শহরগুলোতে সাপ্লাই করতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে দাম অনেক কমে যাবে। তাদের আমরা সামনের দিনগুলোতে উৎসাহী করব। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ডিস্ট্রিবিউটার অধিকাংশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের ছিল। তাদের অধিকাংশ কিন্তু এখন নেই। টিসিবির কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে আছে। টিসিবির কার্যক্রম আমরা আরও শক্তিশালী করার কথা ভাবছি।
এখন চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট কারা নিয়ন্ত্রণ করছে, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে যে সিন্ডিকেট ছিল, সেটা আওয়ামী লীগ সরকার নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু সিন্ডিকেটের ভেতরে তো ব্যবসায়ীরাই বসে ছিলেন। তারা এখনো রয়ে গেছে। তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ বাঁচাতে কোনো কোনো রাজনীতিবিদের সঙ্গে লিয়াজোঁর মাধ্যমে সিন্ডিকেট টিকিয়ে রেখেছেন।

সেক্ষেত্রে আমরা শনাক্ত করছি। কাওরান বাজারে চাঁদাবাজির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, একজন চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হলে সেই জায়গায় অন্যজন রিপ্লেস হয়ে যায়। আমরা গোড়াটা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি, কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সহায়তা করতে হবে।

×