ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১

প্রকৌশলীসহ আটক ৩

দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ১০ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ০০:৪৩, ১১ অক্টোবর ২০২৪

দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা

তানজিল জাহান তামিম

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ঘরে ঢুকে তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম (৩২) নামে এক যুবককে মারধর ও গলা টিপে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগর প্রজেক্টের ৪ নম্বর রোডের ডি-ব্লকে আটতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে এক প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।

নিহত যুবক দীপ্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। জানা গেছে, নিজেদের জমিতে নির্মিত অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানি ও তামিমদের বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তামিমের বাড়িতে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী প্রবেশ করে। বাগ্বিত-ার একপর্যায়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়।
তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ অভিযোগ করেন, প্লেসান্ট প্রোপার্টিস নামে ওই কোম্পানির কর্ণধার শেখ রবিউল আলম রবির নির্দেশে এ হত্যাকা- ঘটেছে। তিনি হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়িটির ল্যান্ড ডোনার তামিমের বাবাসহ তিনজন। তাদের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন প্লেসান্ট প্রোপার্টিস নামে ডেভেলপার কোম্পানির লোকজন। তাদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন ছিলেন। তারা ল্যান্ড ডোনারদের সঙ্গে বাগ্বিত-া শুরু করে। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তারা তামিমের বুকে কিল-ঘুষি দেয়। এরপর তার গলাটিপে ধরে। এতে তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের কয়েকজন তাকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর পরই স্থানীয়রা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে প্লেসান্ট প্রোপার্টিসের প্রকৌশলীসহ তিনজনকে আটক করে। তারা হলেন মো. আব্দুর রহিম, মো. কুরবান আলী ও মাহিন। এ ঘটনায় আরও একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
তামিমের বাবা সুলতান আহমেদ জানান, তিনিসহ জমির আরও দুই মালিক আবাসন প্রতিষ্ঠানটিকে জমি দিয়েছেন এবং তার পাঁচটি ফ্ল্যাট পাওয়ার কথা ছিল। ২০২৩ সালে কোম্পানিটি আমাকে দুটি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে। নয়তলা ভবনের সব ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও বাকিগুলোর বিষয়ে গড়িমসি করতে থাকে। অনেক তর্কবিতর্কের পর কোম্পানির মালিকরা আমাদের নিজেদের টাকায় ৭/সি ফ্ল্যাটটির সংস্কার কাজ করতে বলেন, যদিও তাদেরই এটি করার কথা ছিল। আমরা বুধবার কাজ শুরু করলে তাদের (আবাসন কোম্পানির লোকজন) একটি গ্রুপ আমাদের বাধা দেয়।

তামিমের তত্ত্বাবধানে শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার আবার সেখানে কাজ শুরু করলে কোম্পানির কর্মীসহ ৩০ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে ও আমার ছেলেকে কয়েক মিনিট ধরে ঘুষি মারে এবং তাদের মধ্যে একজন আমার ছেলের গলা চেপে ধরে। হামলার পর পরই তামিম অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
তামিরের খালা মাহমুদা বেগম লুবনার অভিযোগ, তামিমকে হত্যার জন্য আবাসন কোম্পানিটি বহিরাগতদের ভাড়া করেছিল।

×