ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১

শমী কায়সার, তারানা হালিম, মমতাজও আসামি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ৫ মামলা

কোর্ট রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ৯ অক্টোবর ২০২৪

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ৫ মামলা

শেখ হাসিনা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা ও অপর তিনটি হত্যাচেষ্টার মামলা এবং একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ। বুধবার ঢাকার পৃথক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা করা হয়েছে।
হাসান মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, অভিনেত্রী শমী কায়সারসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী বিএনপি কর্মী সৈয়দ হাসান মাহমুদ। বাদীর জবানবন্দি রেকর্ডের পর অভিযোগের বিষয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন : সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাতীয় পার্টির নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক এমপি মমতাজ বেগম, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।
 মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের ছাত্র আন্দোলনে নিহত নূর হোসেনকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর আদালতে মামলা করেন হাসান মাহমুদ। কিন্তু আদালত মামলাটি আমলে না নিয়ে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসান মাহমুদকে হত্যার হুমকিসহ হামলা চালানো হয় তার বাড়িঘরে।
এ ছাড়া ২০১৯ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কমিশনার পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন হাসান মাহমুদ। এ লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলে এজাহারভুক্ত আসামিদের মদতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে প্রচারণা না চালানোর হুমকি দেয় তাকে।
পরে ২০২২ সালের ২৫ জুন সন্ধ্যায় রামপুরা ব্রিজ থেকে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাকে ২৯ জুন হাতিরঝিলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা।
ছাত্র ইয়াসিন শেখকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালতে নিহতের মা মঞ্জিলা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে এ ঘটনায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আগামী ৩১ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, হাছান মাহমুদ ও সালমান এফ রহমান। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হন মো. ইয়াসিন শেখ। পরে ২৫ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মাদ্রাসাছাত্র আবু সুফিয়ানকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দারের আদালতে ভুক্তভোগীর চাচা কাওছার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আগামী ৩১ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ ফজলে নুর তাপস ও শেখ ফজলে শামস পরশ। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট মাদ্রাসাছাত্র আবু সুফিয়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ নেন। আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগসাজশে নির্বিচারে গুলি করা হয়। এতে গুরুতর আহত হন সুফিয়ান।
গুমের অভিযোগে এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দিয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান। বুধবার এ অভিযোগ দাখিল করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন। 
সেনা কর্মকর্তা হয়েও গুমের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন হাসিনুর রহমান। তাও দুই দফায় দেড় বছরের বেশি সময় থাকতে হয়েছে আয়নাঘর নামক ভয়ঙ্কর কালো ঘরে থাকতে হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। 
গুমের কারণ হিসেবে তিনি জানান, ভারতবিরোধী মনোভাব ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করাই কাল হয়েছে তার। 
এদিকে, জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন এক ভুক্তভোগী। ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। ক্ষতিপূরণের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য নীতি প্রণয়নের কমিটির মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির দাবি তার।

×