মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
আবারও ওয়ান ইলেভেনের মতো মাইনাস টু ফর্মুলা বিএনপি দেখতে চায় না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিচ্ছি, সময় দেব। কিন্তু কতদিন? আমরা সেই পর্যন্ত সময় দেব, যত দিনে যৌক্তিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যাবে। তিনি বলেন, বিরাজনীতিকীকরণ দেখতে চাই না। মাইনাস টু দেখতে চাই না। জঙ্গিবাদ দেখতে চাই না। উদার গণতন্ত্র দেখতে চাই।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শিক্ষক সমাবেশে তিনি আরও বলেন, বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশে পরিবর্তন এসেছে।
সাময়িক বিজয় হয়েছে, যা ধরে রাখতে হলে সুসংহত থাকতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ সময়। সরকার পরিবর্তন হওয়ায় এখন দলে দলে বেরিয়ে আসছেন। নানা দাবি নিয়ে আসছেন। আর আগে জমি বিক্রি করে আওয়ামী লীগের এমপিদের কাছে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন। দেশ পরিবর্তন না করতে পারলে জাতি চরমভাবে হতাশ হবে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে গেছে মনে করে হাওয়ায় যেন না ভাসি। তাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দুর্নীতির ভূত দূর করতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, না হলে কোনো কিছুই করতে পারবে না। আমরা ব্যর্থ হইনি, আগেও জয়ী হয়েছি, এবারও জয়ী হব।
দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজরা বিএনপির লোক নয় দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দরকার হলে আবার রাজপথে নামতে হবে। আবার বুকের রক্ত দিয়ে দেশে জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। ফখরুল বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করে চাঁদাবাজি করে তারা বিএনপির লোক নয়। দরকার হলে আবার রাজপথে নামতে হবে, আবার বুকের রক্ত দিয়ে দেশে জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে একটা ট্রানজেকশন হচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এই দেশে যেন গণতন্ত্র বিকশিত হতে না পারে সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছে বিদায়ী সরকার। আমরা যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে পারি, তবে আবার সব ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করব।
নানা চক্রান্তের বেড়াজালে শিক্ষা ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরের পরও দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা। যে দলটি গণতন্ত্রের পুরোধা বলে দাবি করেছিল, সেই দলটির কারণে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। পতিত সরকার দেশে বৈষম্যের পাহাড় গড়ে তুলেছে। ৩১ দফায় আমরা সব সমস্যা ও সমাধানের কথা বলছি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা ভালোভাবে তার পরিবারকে কাপড় কিনে দিতে পারেন না। আজকে যে দাবি উঠেছে তা অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত যে শিক্ষকদের জাতীয়করণ করতে হবে। মূলত আপনাদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে আমরা অবহিত। সমাধান করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘একটা চাকরির জন্য আওয়ামী লীগের এমপিদের হাতে জমি বেচে যে লাখ লাখ টাকা তুলে দিয়েছেন, তা কি ঠিক করেছেন? মানসিকতা পরিবর্তন না করলে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হবে না।’ শিক্ষকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বলতে দ্বিধা নেই, শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা এমন জায়গায় চলে গেছে, যা দিয়ে জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই জায়গাটা ঠিক করার সময় এখন। পরিবর্তন করতে না পারলে জাতি চরমভাবে হতাশ হবে। জাতীয়করণ করার পর সিলেকশনের প্রশ্ন আসবে। শিক্ষকদের গুণগতমান অর্জন করতে হবে। শিক্ষকদের দলকানা হলে চলবে না।
বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘এই যে দেশটা, সাঈদ থেকে শুরু করে বাচ্চারা জীবন দিল, আজকে সুযোগ এসেছে; সেই সুযোগটা কাজে লাগান। যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষের শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমতায় গিয়ে লাভ হবে না। আপনাদের প্রতি মুহূর্তে ভাবতে হবে জাতিকে কী দিলাম।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খুব অসুস্থ। তার রোগমুক্তি কামনায় সবাই দোয়া করবেন। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেন দেশে ফিরতে পারেন তার জন্যও দোয়া করবেন।