ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১

নতুন হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ, রহস্য কী? 

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ১ অক্টোবর ২০২৪

নতুন হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ, রহস্য কী? 

দুই মাস চলে যাওয়ার পরও এখনো অনেকেই কাজে যোগ দেননি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে মানুষ হত্যা এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগের কারণে বাহিনীটি ব্যাপক জনরোষে পড়ে।

এতে দেশের বেশির ভাগ থানা পুলিশশূন্য হয়ে যায়। নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা কাজে ফেরেন। তবে প্রায় দুই মাস চলে যাওয়ার পরও এখনো অনেকেই কাজে যোগ দেননি। যারা এখনো যোগ দেননি তাদের আর পুলিশ বলার সুযোগ নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে।

এদিকে সরকার পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে পুলিশে বড় নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই পুলিশে তিন হাজার কনস্টেবল নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রেখে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৪টি জেলায় তিন হাজারের বেশি পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে বলে সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদর দফতরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জুন, ২০২৪ পর্যন্ত শূন্যপদের ভিত্তিতে ৬৪টি জেলায় তিন হাজারের বেশি ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শূন্য পদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এ সংখ্যা বাড়তে পারে।

পুলিশ সদর দফতর নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে এ সম্পর্কিত তথ্য সম্বলিত একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। কর্মকর্তা বলেন, মূল নিয়োগ প্রক্রিয়া ২৫ অক্টোবর শুরু হবে এবং ৪ ডিসেম্বরে শেষ হবে।

মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর বলেন, পুলিশ সদর দফতর দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়া এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখার মাধ্যমে টিআরসি নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।

সাগর বলেন, পুলিশ সদর দফতর ইতোমধ্যেই ইচ্ছুক প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় কারো সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনে জড়িত না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

ইচ্ছুক টিআরসিকে পুলিশ সদর দফতরের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অন্তত সাতটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে।

এই পদক্ষেপগুলো হলো- প্রাথমিক স্ক্রিনিং, শারীরিক পরিমাপ এবং নথি যাচাইকরণ, শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা, বুদ্ধিমত্তা প্রশ্ন পরীক্ষা ও ভাইভা, মেডিকেল পরীক্ষা, পুলিশ যাচাইকরণ এবং পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিটিসি) যোগদান।

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)সহ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা শিক্ষানবিশ পুলিশের ন্যায্য নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য তাদের মাঠপর্যায়ের কাজ শুরু করেছে।

পুলিশের নিয়োগের ব্যাপারে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) কথা বলেছেন, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তারা নতুন পুলিশ সদস্য নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন এবং এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি বিজ্ঞাপনও প্রকাশিত হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগের বিজ্ঞাপনও দুয়েক দিনের মধ্যে প্রকাশিত হবে। আমরা বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এবং আনসার সদস্যদের নিয়োগের পরিকল্পনা করছি।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের একটি বড় সংখ্যায় এখনো কাজে যোগদান করেনি বলে জানা গেছে। তাদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করছে সরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কত পুলিশ এখনো কাজে ফেরেনি জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ১৮৭ জনের মতো ছিল। পরে মনে হয় আর কেউ যোগদান করেননি। যারা এখনো যোগদান করেনি তাদের আমরা পুলিশ বলব না। তাদের ক্রিমিনাল বলব।

বারাত

×