ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১

মুক্ত মত প্রকাশের কারণে হওয়া মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:০৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুক্ত মত প্রকাশের কারণে হওয়া মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

 মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন। 

সাইবার আইনে দায়ের হওয়া স্পিচ অফেন্স (মুক্ত মত প্রকাশের কারণে মামলা) সম্পর্কিত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা ছাড়া এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন। 

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাবলিক রিলেশন্স অফিসার ড. মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর অধীনে চলতি বছর আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঁচ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্ত মত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং কম্পিউটার হ্যাকিং বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

বর্তমানে স্পিচ অফেন্স সম্পর্কিত মোট এক হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান। এর মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন এবং ৮৭৯টি মামলা দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
স্পিচ অফেন্স সম্পর্কিত মামলাগুলোর মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অধীনে ২৭৯টি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৭৮৬টি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে ২৭৫টি মামলা চলমান।

বর্তমান সরকার স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক হাজার ৩৪০টি স্পিচ অফেন্স সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলা চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিলের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হবে। এসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন।

উল্লেখ্য, এর আগে দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো পুনর্বিবেচনা করা হবে।
 
বৈঠকে আলোচনার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমি বলেছি, সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে সমালোচনা রয়েছে, সেগুলো আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং তরুণদের ব্যাপকভাবে এই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। দেশে এবং দেশের বাইরে আইটিতে যারা দক্ষ ও নতুন ধরনের কাজ করতে আগ্রহী তাদের নিয়ে বিশেষ টিম গঠনের কথা আমরা ভাবছি।’

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক সাইবার নিরাপত্তাসূচকে বাংলাদেশ রোল মডেলের তালিকায় স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) এক সূচকে বাংলাদেশ সাইবার নিরাপত্তার সর্বোচ্চ স্কোর করা দেশগুলোর একটি। সম্প্রতি আইটিইউ ‘গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেক্স’ ২০২৪ প্রকাশ করে। ২০২০ সালের পর চলতি বছর তারা এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

বাংলাদেশ ২০২০ সালে ৮১ দশমিক ২৭ স্কোর পেয়েছিল। আইটিইউর প্রতিবেদন ১৯৪টি দেশের ২০২৩-২০২৪ সালের তথ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে যারা ৯৫ থেকে ১০০ নম্বর পেয়েছে, তাদের রোল মডেল বলা হয়েছে। এমন দেশের সংখ্যা ৪৬টি। এ তালিকায় বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান রয়েছে।

এবি

×