ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

হাসপাতালে ভর্তি ৮৬০

ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, একদিনে সর্বোচ্চ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, একদিনে সর্বোচ্চ

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ৭ জনের মৃত্যু

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে তাদের মৃত্যু হয়। যা চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৬০ জন। 
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১০১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৯৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৮১ জন, খুলনা বিভাগে ৫৩ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন ও রংপুর বিভাগে ১৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে সারাদেশে ৬২১ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৫ হাজার ২৪১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২৮ হাজার ৫৬৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৫০ জনের। গতবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
দেশে বর্ষা আসলেই বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গতবছরের তুলনায় এ বছর একটু দেরিতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ শুরু হলেও সেপ্টেম্বরে এসে চোখ রাঙাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগ। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ, মারা যাচ্ছেন অনেকেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই বছরের মতো এবারও মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুর ডেন-২ সেরোটাইপ বা ধরনে। তবে গত দুই বছর ঢাকাসহ দেশের মানুষ এই ডেন-২ সেরোটাইপে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এতে ভয়াবহতা কম দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউিট (আইইডিসিআর) এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫০ জন রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করেছে। এ পরীক্ষায় দেখা যায় ৬৯ দশমিক ২০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গু রোগীর ধরন ছিল ডেন-২। চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গুর (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪) চারটি ধরন রয়েছে। ডেঙ্গুর চারটি ধরনের একটিতে পজিটিভ হলে পরবর্তীতে ওই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তেমন নেই। তবে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হতে পারে।
পর পর দুই বছর ডেঙ্গুর একই সেরোটাইপ বা ধরনে আক্রান্তের বিষয়ে আইইডিসিআরের সায়েন্টিফিক অফিসার (ভাইরোলজি বিভাগ) ডা. আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণত ডেঙ্গুর একটি সেরোটাইপের প্রাধান্য থাকে তিন থেকে চার বছর। এ সময় বড় একটি সংখ্যক মানুষ এই সেরোটাইপে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের মধ্যে ইমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি) হয়।

গতবছরও সেরোটাইপ-২ এর প্রাধান্য দেখা গেছে। যেহেতু এবার সেরোটাইপ (ডেন-২) রয়েছে, সুতরাং আগের সেরোটাইপটার জন্য মানুষের মধ্যে ইমিউনিটি আছে। সে হিসেবে বলা যায় ডেন-২ ঘায়েল করতে পারবে এমন সুযোগ কম। তবে ঢাকার বাইরে বড় সংখ্যক মানুষ যারা ডেন-২ আক্রান্ত হয়নি এখনো, তাদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

×