ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১

নিউইয়র্কে মানবাধিকার কর্মকর্তাদের প্রধান উপদেষ্টা

মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকার দেশে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কের একটি হোটেলে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোচনা হয়। মানবাধিকার কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের সময় সম্পাদিত প্রায় ৩ হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তারা নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার ও নির্বিঘেœ ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটক কেন্দ্রের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকারের সভাপতি কেরি কেনেডি ৯ জন মানবাধিকার কর্মকর্তার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও বৈঠকে যোগ দেন।
ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ‘একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে, এটি এক নতুন বাংলাদেশ।’
প্রফেসর ইউনূস কীভাবে পূর্বের স্বৈরাচারী শাসনামলে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল এবং তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত কী করেছে- তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার পুলিশ সংস্কার সংক্রান্ত একটি কমিশনসহ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার তার কর্মকা-ের যে কোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী প্রশাসন বাকস্বাধীনতা বজায় রাখবে বলে অঙ্গীকার করেন। ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিচলিত নয়। আসলে আমরা সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকার দেশে কারও কণ্ঠরোধ করবে না।’
হংকংভিত্তিক সাবেক মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনারও বৈঠকে বক্তৃতা করেন। 
এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড সামিট অনুষ্ঠানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অপরাধ করে থাকলে তাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সঞ্চালক ড. ইউনূসের কাছে জানতে চান তার নিজের নির্বাচন করার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাকে দেখে কী আপনার মনে হয় আমি নির্বাচন করব? আমি নির্বাচন করব না।’
গেটস ফাউন্ডেশনকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে আরও সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গেটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক সুজমান সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে তাদের সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা গেটস ফাউন্ডেশনকে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য খাতে প্রতিষ্ঠানটির সহযোগিতা বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন। এতে মার্ক সুজমান ইতিবাচক সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে তাদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ দেখান।’
তিনি বলেন, গেটস ফাউন্ডেশন পৃথিবীব্যাপী স্বাস্থ্য খাতে আর্থিক সহায়তা ও দাতব্য কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং আইসিডিডিআরবিতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্ত রয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, গেটস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে তাদের সহায়তা বাড়ানোর যে আগ্রহ দেখিয়েছে তার অর্থ হলো- বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি অন্যান্য খাতে সামাজিক ব্যবসা পরিচালনারও আহ্বান জানান।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে তার সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।
চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায় : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশে সোলার প্যানেলে বিনিয়োগ করতে চায় এবং বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার মাধ্যমে কৌশলগত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।  
বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চীনা সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারকরা বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে আগ্রহী। চীনা সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
গত মাসে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি চীনের সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারকদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সোলার প্যানেলে চীনা বিনিয়োগ এলে সেটি আমাদের বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মাইলফলক হবে।
সাক্ষাৎকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসকে ‘চীনের জনগণের পুরনো বন্ধু’ উল্লেখ করেন এবং তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ থাকবে উল্লেখ করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা পূর্ণ আস্থা রাখি যে আপনি দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, বেজিং দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব বাড়াতে উৎসাহিত করবে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় গুরুতর আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিতে চীন রেডক্রস চিকিৎসকদের একটি টিম ঢাকায় পাঠিয়েছে। 
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে আরও বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাবে। অধ্যাাপক ইউনূস এই আন্তরিকতার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি চীনের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার অদম্য প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
ড. ইউনূস বলেন, চীনের সোলার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিয়োগ করতে পারে, যা অনেক ধনী দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকারের সুবিধা পাবে। তিনি আরও বলেন, সোলার কোম্পানি ছাড়াও অন্যান্য চীনা প্রস্তুতকারকরা তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’ সূচনার আহ্বান জানান। তিনি দুই দেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।’
জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে নেপালের সঙ্গে আলোচনা : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোদারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বুধবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উভয় নেতা এ সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। একইসঙ্গে দুই নেতা বাংলাদেশে নেপালি শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির কথা স্বীকার করেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে আমি আনন্দিত। তার সঙ্গে আমার নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময়ে জ্বালানি ও ট্রানজিট সহযোগিতা, পর্যটন, সাংস্কৃতিক বিনিময়, শিক্ষাগত সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতার ওপর নজর দেওয়া হয়।’
বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস ও কে পি শর্মা ওলির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেন, বৈঠকে তারা ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি ও বাণিজ্য সহযোগিতা কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রেস সচিব বলেন, নেপালের জলবিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত রয়েছে এবং তারা দুই-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবিদ্যুৎ রপ্তানিতে সক্ষম হবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
অনেক নেপালি শিক্ষার্থী প্রতি বছর বাংলাদেশে পড়াশোনা করতে আসে উল্লেখ করে আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং ওলি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্ভবত নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। আলম বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার থ্রি জিরো আইডিয়া শেয়ার করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস ইউএসএআইডি প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার ভলকার টুর্ক, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিইও মার্ক সুজমানের সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সাক্ষাৎ করেছেন।
তিনি সামাজিক ব্যবসা, যুব ও প্রযুক্তি বিষয়ক জাতিসংঘের একটি উচ্চ-পর্যায়ের ইভেন্টে ভাষণ দেন এবং মানবাধিকার বিষয়ক সিএসওর একটি গ্রুপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

×