ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণা

শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ধাতু ফলমূলে কীটনাশক

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ধাতু ফলমূলে কীটনাশক

.

লালশাক শিম, শসা, ঢ্যাঁড়শ, পটোলের মতো সবজিতে মিলছে ক্ষতিকর ভারি ধাতু। শুধু শাক-সবজি নয়; আম, লিচুসহ অন্যান্য ফলেও কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর ফলে ধীরে ধীরে মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের খাদ্যচক্রে এসব ভারি ধাতুর প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁঁকির কারণ হতে পারে। তবে সেজন্য নির্দিষ্ট কোনো ফসল বা খাদ্যপণ্য নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে খাদ্য উৎপাদনের উৎসে বিষ ছড়ানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে হেভি মেটাল বা ভারি ধাতু নিয়ন্ত্রণে সার কীটনাশক ব্যবহার নিরাপদ করতে হবে। আমদানি করা কীটনাশকে ভারি ধাতু যেন না থাকে এটাও নিশ্চিত করা জরুরি।

সোমবার রাজধানীতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গবেষণার ফল অবহিতকরণ সেমিনারে ৯টি সবজিতে হেভি মেটালের উপস্থিতি এবং ৪টি ফলে কীটনাশকের রেসিডিউর নিয়ে করা গবেষণার ফল উপস্থাপন করা হয়। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কর্তৃপক্ষের সদস্য . মোহাম্মদ সোয়েব। বিএফএসএ সদস্য . মোহাম্মদ মোস্তফার সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শের--বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক . মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক . শামশাদ বেগম কোরাইসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক . ইকবাল রউফ মামুন।

সম্প্রতি সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক . শফিকুল ইসলাম . মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া। তারা বাজার থেকে ধরনের সবজি সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল আলু, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, টমেটো, লালশাক, পটোল, বাঁধাকপি, শসা মটরশুঁটি।

গবেষণায় দেখা গেছে, এসব সবজিতে লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কয়েকটি রাসায়নিকের উচ্চমাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মাত্রায় হেভি মেটালের উপস্থিতি পাওয়া গেছে লালশাকে। শাক-সবজি ফলে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি জানতে পৃথক দুটি গবেষণা পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এসব গবেষণায় সবজিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ফলে মিলেছে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ।

গবেষণায় উঠে এসেছে, লালশাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যাডমিয়ামের মতো ভারি ধাতু পাওয়া গেছে। যেখানে ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১৯০ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, লালশাকে পাওয়া গেছে ৭০৪.৩২ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। বেগুনে পাওয়া গেছে ২৭৫.৬৬ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি, ঢ্যাঁড়শে ৩৪৯ মাইক্রো গ্রাম টমেটোতে ১৯৫ মাইক্রো গ্রাম প্রতি কেজি। ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ উপস্থিতি পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে।

একইভাবে ক্রোমিয়ামের মতো ভারি ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে শিম, শসা, ঢ্যাঁড়শ, পটোল লালশাকে। লেডের মতো ভারি ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শসা, ঢ্যাঁড়শ, পটোল, টমেটো লালশাকসহ ৯টি সবজিতে। এদিকে, আম, লিচু, বরই পেয়ারার ৩২০টি নমুনায় কীটনাশক রেসিডিউ পরীক্ষা করে গড়ে ১০ শতাংশের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

×