
টিনগুলো দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করে পরিবারগুলো যাতে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের দুর্দশা মোকাবিলায় মাস্তুল ফাউন্ডেশন গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়া শতাধিক পরিবারের মাঝে ঘর নির্মানের সহায়তায় টিন বিতরন করেছে। এই টিনগুলো দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করে পরিবারগুলো যাতে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়াও, ফাউন্ডেশনটি এই পরিবারগুলোকে মাসিক ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছে যাতে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতে সহজ হয়। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই মানবিক উদ্যোগ বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য আশার নতুন সূচনা বয়ে এনেছে।
৪৮ বছর বয়সী রাজ মিস্ত্রির যোগালী নূর মোহাম্মদের জীবনে এখন বড় সংকটময়। তিন সন্তান নিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি, বউয়ের চিকিৎসার জন্য তাকে দেড় লক্ষ টাকা লোন নিতে হয়েছিল। এরই মধ্যে বন্যা কেড়ে নিয়েছে তার শেষ সম্বল ঘরটুকু । কাদার মধ্যে চটের বস্তা বিছিয়ে ঘুমাতে হয় পরিবার নিয়ে। একটি আসবাবপত্রও অবশিষ্ট নেই। নতুন করে ঘর তোলা তো দূরের কথা, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগাড় করাও তার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।এই অবস্থায় ঘর তৈরিতে হযোগিতা পেয়ে জানান,“এই সহযোগিতা আশার আলো হয়ে আমার কাছে এসেছে।”
পুনর্বাসন প্রকল্প পরিচালনা করছে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের হেড অব অপারেশন রায়হান রহমান। তিনি জানিয়েছেন, বন্যার শুরু থেকেই তারা ফেনী, নোয়াখালি, কুমিল্লা জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করছেন। বন্যা এতটাই আকস্মিক ছিল যে মানুষজন সবকিছু হারিয়ে বিপর্যস্ত। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পানির সুবিধা, স্বাস্থ্যসুবিধা সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এই অবস্থায় মানুষ নতুন করে জীবন শুরু করার মনোবল হারিয়ে ফেলেছে। তাই তাদের পুনর্বাসন করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা ১০০ এর অধিক ঘর - বাড়ি, ল্যাট্রিন ও ডাটাবেজ তৈরি করেছে। কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি, কর্পোরেট, এন জিও চাইলে সরাসরি অথবা সংগঠনের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারেন ।
উল্লেখযোগ্য, মাস্তুল ফাউন্ডেশন বন্যা কবলিত ১০০০ পরিবারকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। মাসিক ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০০০টি ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ, ৫০০ টিউবওয়েলের পূর্ণনির্মান, ২০০ ল্যাট্রিন এবং স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে ৫০০০ জনকে চিকিৎসা এবং ২৫০০ শিশুকে শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ১০০০ কৃষক ও খামার ব্যাবসায়ীদের জন্য ফসলের বীজ, গরু-ছাগল, হাস-মুরগী মাছের পোনা এবং অনান্য সহযোগিতার মাধ্যমে পুনরায় সাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
টুম্পা