ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) আজ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) আজ

আজ ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)

আজ ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ সালের এই দিনে মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) এর শুভ আবির্ভাব ঘটে।
এদিকে, ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা মহানবী (স.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
দিনটি উপলক্ষে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রবিবার এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, নবীকূলের শিরোমণি, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জন্ম ও ওফাতের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) সারাবিশ্বের মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত একটি দিন। 
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান ‘মদিনা সনদ’ ছিল মহানবী (স.) এর বিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার প্রকৃষ্ট দলিল। এ দলিলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সর্বজনীন ঘোষণা রয়েছে ধর্মীয় ও প্রার্থিব জীবনে তার শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। তার জীবনাদর্শ আমাদের সবার জীবনকে আলোকিত করুক, আমাদের চলার পথের পাথেয় হোক, মহান আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করি।

মহান আল্লাহ আমাদের মহানবীর সুমহান আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দিন। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (স.) নামে পরিচিত। ৫৭০ সালের এই দিনে (১২ রবিউল আউয়াল) আরবের মক্কা নগরীর সভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.)।
তার জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। ওই সময় আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’র যুগ। তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসূলুল্লাহ (স.)-কে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন।

মহানবী (স.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়াত লাভ বা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন। পবিত্র কুরআন শরিফে বর্ণিত আছে-মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’।

এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এ দিনের (পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর) গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।
এদিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য বজায় রেখে আজ সোমবার থেকে তিন দিনব্যাপী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ও মসজিদে গাউছুল আজম কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যহ বাদ মাগরিব থেকে শুরু হয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হবে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিল। দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ কামনায় দোয়ার পাশাপাশি দেশ বরেণ্য ওলামা মাশায়েখ, ইসলামিক স্কলার, সুবিখ্যাত ওয়াজিনগণ এ মহতি মাহফিলে প্রিয় নবী (স.) এর জীবন, কর্ম, অবদান, আদর্শ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। সকল আশেকে রাসূল ভাই ও বোনদের আয়োজিত এ মাহফিলে অংশগ্রহণের জন্য সংগঠন ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেছেন।

্এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রামের আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভা-ারীয়ার উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিউটিশনে জশনে জুলসের আয়োজন করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও মাইজভা-ারীয়া। সভাপতিত্ব করবেন, দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহসূফী সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী মাইজভা-ারী। 
চট্টগ্রামের অপর প্রতিষ্ঠান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)  উপললক্ষে এখানে ২৪৫০টি খতমে কুরআন, ২২৭টি তাহলীল, ৭০টি খতমে ইউনুস ও ২৮টি দরুদে সাইফুল্লাহ আদায় করা হয়। রবিবার বাদ জোহর এক মিলাদ  শরিফে দেশের উন্œতি ও অগ্রগতি কামনায় দোয়া করা হয়। ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মাওলানা কাজী মোহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী মাওলানা জসিম উদ্দীন নূরী ও মাওলানা গোলাম রাব্বানী ফয়সাল।

×