ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

পুলিশের লোগো ও পোশাক বদলে যেতে পারে

আজকে নতুন সরকার আসার পরও পুলিশ বাহিনী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়াতে পারছে না

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১১:২৫, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকে নতুন সরকার আসার পরও পুলিশ বাহিনী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়াতে পারছে না

আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। ফাইল ছবি

ব্রিটিশ আমলের আইন আর মান্ধাতার আমলের ধ্যান ধারণা বাদ দিয়ে কীভাবে জনবান্ধব পুলিশ হতে পারে সেই দিকে নজর দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ‌‌‌‘পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন’র প্রধান সফর রাজ হোসেন। 

জুলাই বিদ্রোহে বাংলাদেশ পুলিশ যে ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তেমনটা যাতে ভবিষ্যতে আর কখনো না ঘটে তা নিশ্চিত করার কথাও বলেন সাবেক এই আমলা।

জুলাই অভ্যুত্থান নিষ্ঠুর হাতে দমাতে চেয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ। প্রকাশ্যে নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর যেভাবে গুলি চালানো হয় তা স্বাধীন দেশে অকল্পনীয়!

আন্দোলনে অংশ নেয়া বহু মানুষ মনে করেন, বাংলাদেশ পুলিশের এমন রূপ একদিনে তৈরি হয়নি। বাহিনীতে দিনের পর দিন নানা অনিয়ম আর বেআইনি কাজকে এড়িয়ে গেছে সরকার। ফুটপাতের দোকানে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে হেফাজতে মৃত্যু-বিচারহীনতার চূড়ান্ত পর্যায়ে অবতীর্ণ হয় বাংলাদেশ পুলিশ।

ব্রিটিশ আমলে ১৮৬১ সালে প্রণীত আইন দিয়ে চলছে বাহিনীটি। সবশেষ ২০০৭ এ বাহিনীতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরবর্তীতে সংস্কারের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করেনি আওয়ামী লীগ সরকার। দুই লাখ ১৩ হাজার জনবলের এ বাহিনীতে গত ১৫ বছরেই নিয়োগ পান ১ লাখ ৫ হাজার কন্সটেবল ও ১১ হাজার এসআই। 

অভিযোগ আছে, যাদের বড় অংশ নিয়োগ পেয়েছেন-রাজনৈতিক বিবেচনায়। যে কারণে জুলাই আন্দোলন দমাতে বেশি তৎপর ছিলো মাঠ পর্যায়ের এই সদস্যরা। সেইসব দুঃসহ স্মৃতি এখনও জীবন্ত।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা চিন্তাই করা যায় না যে, আমার দেশের পুলিশ আমার দেশের ছাত্রদের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালাচ্ছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালাচ্ছে। আজকে সেই নির্মমতার গল্প পুরো পৃথিবী জানে। পুলিশ বাহিনীকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, আজকে নতুন সরকার আসার পরও এই বাহিনী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়াতে পারছে না।

পুলিশের বর্বরতা যত বেড়েছে তেমনি বেড়েছে আন্দোলনের গতি। যে কারণে জনমানুষের ক্ষোভের শিকার হয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আহত ও নিহত হন।

এমন বাস্তবতায় সরকারের পক্ষে ঘোষণা এলো সংস্কার আনা হবে বাংলাদেশ পুলিশে। সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন সাবেক আমলা সফর রাজ হোসেন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন তিনি। বাহিনীটিতে সংস্কারের জন্য সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কাজ করার আশা তার।

সফর রাজ হোসেন গণমাধম্যকে জানান, প্রায় ত্রিশ/বত্রিশ বছর চাকরি করেছি পুলিশের সঙ্গে। যেটুকু আমার অভিজ্ঞতা আছে, আমি চেষ্টা করবো রিফর্মের মাধ্যমে যাতে জনকল্যাণমুখী হয় পুলিশ। স্টেক হোল্ডারসহ সবার সঙ্গে পরামর্শ করেই সুপারিশ করবো। গত এক দেড় মাসে যা হয়েছে সেটা যাতে ভবিষ্যতে না হয়।

এসআর

×