ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

অর্থ পাচারের বিষয়ে তদন্ত করছে দুদক

যুক্তরাজ্যে ২৬০ বিলাসবহুল বাড়ি সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যুক্তরাজ্যে ২৬০ বিলাসবহুল বাড়ি সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের

.

শংকর কুমার দে হ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব সম্পদের অর্থ পাচার করা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। বৈধভাবে এসব সম্পদ অর্জিত হয়েছে কিনা আর হয়ে থাকলে তার প্রকৃত কর পরিশোধ করা হয়েছে কিনা সেই বিষয়টিও অনুসন্ধানে সামনে এসেছে। তদন্তে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে যুক্তরাজ্যে ২৬০টি বিলাসবহুল বাড়ির সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে ১৫৫টি বাড়ি রয়েছে রাজধানী লন্ডনে। এ ছাড়া লিভারপুলে রয়েছে ৩০টি আর বাকিগুলো অন্যান্য বড় শহরে। ব্রিটেনের বর্তমান বাজারমূল্যে বাড়িগুলোর মূল্য প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১০-২০২১ সাল পর্যন্ত এসব সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন। এ ছাড়া তাদের নামে দুবাইয়ে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার তথ্য পাওয়া গেছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে দেশে-বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অনুসন্ধানে নামার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। 
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। এসব হিসাবে আগামী ৩০ দিন কোনো লেনদেন করা যাবে না। এমনকি তাদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডেও কোনো লেনদেন হবে না। 
দুর্নীতি তদন্ত কমিশনের আমলে নেওয়া অভিযোগের তদন্তে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউজ তথ্যমতে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২৬০টি প্রপার্টি কিনতে ব্যয় করেছেন প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড, যা বাংলদেশী মুদ্রায় প্রায় এক হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। তার মধ্যে ১৭৯টি বাড়ি ও ফ্ল্যাট জেডটিএস প্রপার্টিজের আওতায় রয়েছে। জেডটিএস প্রপার্টিজের একক মালিক সাইফুজ্জামান চৌধুরী। আর বাকি বাড়িগুলো প্রতিমন্ত্রীর অন্যান্য প্রপার্টিজ কোম্পানির আওতায়। এর মধ্যে সবচেয়ে দামী বাড়িটি রয়েছে লন্ডনে। বর্তমানে এই বাড়ির দাম ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৮২ কোটি টাকা। এটি তিনি ২০২১ সালের ১৬ জুলাই এককালীন মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে কিনেছেন।
যুক্তরাজ্য সরকারের কোম্পানি হাউজের তথ্য থেকে দেখা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আটটি প্রপার্টিজ কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানি ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে খোলা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি তার একক মালিকানাধীন ও কয়েকটিতে তার পরিবারের সদস্যদের শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রাখা হয়েছে। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১৪ সালে র‌্যাপিড র‌্যাপ্টর এফজিই এবং ২০১৫ সালে জেবা ট্রেডিং এফজিই নামে দুটি কোম্পানি খোলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এর মধ্যে একটি কম্পিউটার ও সফটওয়্যার ব্যবসা এবং আরেকটি ভবন নির্মাণসামগ্রী বিক্রির ব্যবসা। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুবাই ইসলামিক ব্যাংক, ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের দুবাই শাখায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব হিসাবে ৩৯ হাজার ৫৮৩ দিরহাম এবং ছয় হাজার ৬৭০ ডলার জমা রয়েছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত দুবাইয়ে ২২৬টি স্থাবর সম্পত্তি কেনাবেচা করেছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এবং ৩০ নভেম্বর দুবাইয়ের আল-বারশা সাউথ-থার্ড এলাকায় ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম দিয়ে দুটি বাড়ি কেনা হয়; যা বাংলাদেশী মুদ্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর মিলে বিদেশী অন্তত ছয়টি কোম্পানি পরিচালনা করছেন বলে তথ্য দেওয়া হয়। যেগুলোর মূল্য ১৬.৬৪ কোটি পাউন্ড বা দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা বলে জানানো হয়। যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে অন্তত ছয়টি কোম্পানি পাওয়া যায় যার সবই আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এগুলো হচ্ছে, জেডটিজেড প্রোপার্টি ভেনচার্স লিমিটেড, আরামিট প্রোপার্টিজ লিমিটেড, রুখমিলা প্রোপার্টিজ লিমিটেড, সাদাকাত প্রোপার্টিজ লিমিটেড, জেবা প্রোপার্টিজ লিমিটেড এবং জারিয়া প্রোপার্টিজ লিমিটেড। এসব কোম্পানিরই পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। এর মধ্যে শুধু রুখমিলা প্রোপার্টিজ লিমিটেডের পরিচালক পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই কোম্পানিটির ঠিকানা লন্ডনের ওয়ারউইক লেন। বাকি সব কোম্পানির ঠিকানা লন্ডনের ডেভনশায়ারস্কয়ার উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার ‘সাম্রাজ্য’। ব্লুমবার্গ বলছে, ওই সম্পত্তির মালিক বাংলাদেশের একজন রাজনীতিক (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী)। বাংলাদেশের কোনো নাগরিক, বাসিন্দা কিংবা সরকারি কর্মচারীর বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। এর অধীনে করপোরেশনগুলোর ক্ষেত্রেও বিদেশে তহবিল স্থানান্তরে বিধিনিষেধ রয়েছে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু শর্তপূরণ সাপেক্ষে এ অনুমতি (তহবিল স্থানান্তর) দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড বা দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তির রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন যুক্তরাজ্যে। যুক্তরাজ্যে কোম্পানি হাউসের করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে ব্লুমবার্গের বিশ্লেষণে এই পরিসংখ্যান  তৈরি করা হয়েছে।
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে সেন্ট্রাল লন্ডনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে টাওয়ার হ্যামলেটসে আবাসন; যেখানে ইংল্যান্ডের বৃহত্তম বাংলাদেশী কমিউনিটির আবাসস্থল এবং লিভারপুলে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক ভবন। যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের আড়াইশ’ সম্পত্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্লুমবার্গ বলছে, যখন এসব সম্পত্তি কেনা হয় তখন যুক্তরাজ্যজুড়ে তীব্র আবাসন সংকট চলছিল এবং এর ৯০ ভাগই ছিল সদ্য  তৈরি অর্থাৎ নতুন বাড়ি।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ডিসেম্বরে প্রাক-নির্বাচনী ঘোষণায় সাইফুজ্জামান তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন টাকা (দুই দশমিক চার মিলিয়ন ডলার) এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের মোট সম্পদের পরিমাণ ৯ লাখ ৯৩ হাজার ডলার বলে জানান। কিন্তু তিনি বাংলাদেশে সম্পদের ঘোষণাপত্রে তার যুক্তরাজ্যের সম্পদের পরিমাণ দেখাননি। মন্ত্রী হিসেবে ২০২২-২৩ সালে তার বেতন প্রায় ১০ হাজার পাউন্ড হিসাবে দেখানো হয়। 
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বসবাসরত অবস্থায় একজন ব্যক্তির বিদেশে সম্পদ অর্জনের কোনো বিধান নেই। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে এ ধরনের কিছু করার অনুমতি দেওয়া হয় না। যুক্তরাজ্যের ২০১৭ সালের অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং আইনে সংজ্ঞায়িত ‘পলিটিক্যালি এক্সপোজড পারসন (পিইপি)’ ক্যাটাগরিতে পড়েন সাইফুজ্জামান।

এটি যুক্তরাজ্যে ব্যবসায়িক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সম্পত্তির এজেন্ট, ঋণদাতা, প্রপার্টি আইনজীবী এবং অন্যদের ওপর পিইপি শনাক্ত করার কাজ করে। এসব ব্যক্তি সম্পত্তি কেনার মতো ব্যবসায়িক লেনদেনে নিযুক্ত থাকলে তাদের সম্পৃক্ততা অতিরিক্ত তদন্তের দাবি রাখে।
২০২২ সালে উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের এক আবাসিক এলাকায় একটি সম্পত্তি বিক্রি হয় এক কোটি ১০ লাখ পাউন্ডে। সর্বশেষ যার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক কোটি ৩৮ লাখ পাউন্ড। রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড থেকে খুব কাছেই যুক্তরাজ্যের রাজধানীর সবচেয়ে সমৃদ্ধ এলাকাগুলোর একটিতে অবস্থিত ওই সম্পত্তি, যেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে অভিজাত বেশ কিছু সাদা রঙের বাড়ি। 
ব্লুমবার্গের বিশ্লেষণ অনুসারে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার কিছু আত্মীয় সরাসরি বা সহায়ক সংস্থার মাধ্যমে এক ডজনের বেশি কোম্পানির ব্যক্তিগত শেয়ারে সংখ্যাগরিষ্ঠ বা নিয়ন্ত্রণকারী অংশীদারিত্বের মালিক। এই পোর্টফোলিওতে চারটি পাবলিক কোম্পানি রয়েছে, তাদের মধ্যে আরামিট এবং ইউসিবির সম্মিলিত বাজার মূলধন প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ব্লুমবার্গ বলেছে, দুর্নীতি মামলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং তাদের সম্পদ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের আশপাশে সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করা ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ‘সন্দেহজনক তহবিল’ শনাক্ত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) একজন মন্ত্রীর বিদেশে ২০৩ বিলিয়ন টাকার ব্যবসার বিষয়টি প্রথমবারের মতো সামনে আনে। যদিও টিআইবি কোনো মন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেনি। তবে তারা বলেছে, কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষ যদি তথ্য চায়, তাহলে তারা এর প্রমাণ দিতে প্রস্তুত। 
দুর্নীতি তদন্ত সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাজনীতিবিদদের সম্পৃক্ততা আছে এমন লেনদেন যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আইন আদৌ কার্যকর কি না, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর এসব সম্পত্তির কারণে সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনেও সাইফুজ্জামানের অন্তত পাঁচটি সম্পত্তি খুঁজে পেয়েছে ব্লুমবার্গ। মিউনিসিপ্যাল প্রপার্টি রেকর্ডসের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, প্রায় ৬০ লাখ ডলার দিয়ে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে। 
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। মন্ত্রিসভায় পদ হারালেও সংসদীয় জমি সংক্রান্ত কমিটির সভাপতির পদে বহাল থাকেন তিনি। সাইফুজ্জামান চৌধুরী তার বাবা, প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্থলাভিষিক্ত হয়ে ২০১৩ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন। এর এক বছর পর ভূমি প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর নির্মাণ কোম্পানি আরামিট পিএলসি এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির বড় পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী ইউসিবির চেয়ারম্যান, যেটি ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদ পরিচালনা করে। আরামিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও রুখমিলা জামান। 
দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা নেওয়া জটিল প্রক্রিয়া হলেও ভূমিমন্ত্রী কিভাবে বিদেশে এত সম্পদ গড়ে তুলেছেন সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সম্প্রতি তার নির্বাচনী এলাকায় এক জনসভায় দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি। মন্ত্রী  বৈধ নাকি অবৈধ উপায়ে এ অর্থ আয় করেছেন সেটি নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন। সবচেয়ে  বড় প্রশ্ন হচ্ছে, বিদেশে তিনি এত টাকা নিয়ে গেলেন কিভাবে? 
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর টিআইবি এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এক মন্ত্রীর বিদেশে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে। তবে তিনি নির্বাচনী হলফনামায় এ তথ্য দেননি। ওই সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ওই মন্ত্রীর নাম প্রকাশ করেনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমে বলেছেন, রিয়েল এস্টেট খাত, যে ক্ষেত্রে এই ইনভেস্টমেন্টগুলো, এটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোনো অনুমোদন দেয়নি।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জন্য যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় এক নির্বাচনী জনসভায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি।

×