ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

বিচারের জন্য 

হাসিনাকে ফিরিয়ে না আনলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না: ড. ইউনূস

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৫:৪৮, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হাসিনাকে ফিরিয়ে না আনলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং শেখ হাসিনা। 

পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের কাছে রাজনৈতিক মন্তব্য করা একটি ‘বন্ধুত্বহীন অঙ্গভঙ্গি’। বাংলাদেশে তাকে প্রত্যর্পণ না করা পর্যন্ত উভয় দেশের ‘অস্বস্তি’ রোধ করতে শেখ হাসিনাকে চুপ থাকতে হবে।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এই মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে পিটিআই। আর গতকাল বুধবার পিটিআইকে এই সাক্ষাৎকারটি দেওয়া হয়।

ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারত তাকে রাখতে চায়, তবে শর্ত হবে তাকে চুপ থাকতে হবে।’

দুই দেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়, তখন নয়াদিল্লিকে অবশ্যই এমন ধারণা বাইরে যেতে হবে যে ‘আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্য সকল রাজনৈতিক দলকে ইসলামপন্থী হিসাবে চিত্রিত করে এবং শেখ হাসিনা ছাড়া দেশ আফগানিস্তানে পরিণত হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘ভারতে হাসিনা অবস্থান করায় কেউই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। কারণ, বিচার করার জন্য আমরা তাকে ফেরত আনতে চাই। তিনি (হাসিনা) ভারতে রয়েছেন এবং সেখান থেকেই মাঝে মাঝে তিনি কথা বলছেন, এটি সমস্যা তৈরি করছে। যদি তিনি চুপ থাকতেন, তাহলে আমরা ভুলে যেতাম; মানুষও এটা ভুলে যেত যদি তিনি তার নিজের জগতেই থাকতেন। কিন্তু তিনি ভারতে বসে কথা বলছেন এবং দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন, কেউই এটা পছন্দ করছে না। এটা আমাদের বা ভারতের জন্য ভালো নয়। এটি নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে।’

হাসিনার চুপ থাকার বিষয়ে বাংলাদেশ তার অবস্থান ভারতের কাছে জানিয়ে দিয়েছে কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মৌখিকভাবে এবং বেশ দৃঢ়ভাবে জানানো হয়েছে যে তার চুপ থাকা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘তাকে সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি যে স্বাভাবিক নিয়মেই সেখানে (ভারতে) গেছেন তা নয়। জনগণের অভ্যুত্থান এবং জনরোষের কারণে তিনি পালিয়ে গেছেন। নৃশংসতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ন্যায়বিচারের জন্যই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’

ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, তাকে (হাসিনাকে) ফিরিয়ে আনতে হবে, তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে না। হাসিনা যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন, তাকে এখানে সবার সামনে বিচার করতে হবে।’

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলার সময় ড. ইউনূস ভারতের সাথে সুসম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘নয়াদিল্লিকে এই মনোভাব ত্যাগ করতে হবে যে শুধুমাত্র হাসিনার নেতৃত্বই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। ভারতের তাদের নিজেদের আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসা উচিত যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। এই আখ্যানে ভারত বিমোহিত। ভারতকে এই আখ্যান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও তাদের আরেকটি প্রতিবেশী।’

সূত্র: প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া।

এম হাসান

×