ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

সরকার পতনের একমাস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ আজ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘শহীদি মার্চ’ আজ

শহীদি মার্চ আয়োজন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সারজিস আলম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর সরকার পতনের এক মাসপূর্তি হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। দিবসটি স্মরণ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই দিবসে দেশব্যাপী নিহত শহীদদের স্মরণে আজ ‘শহীদি মার্চ’ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মার্চটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, ধানমন্ডি, সংসদ ভবন, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, শাহবাগ হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে শেষ হবে। এ ছাড়া আগামীকাল শুক্রবার থেকে সারাদেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর করবেন সমন্বয়করা।
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, মাসপূর্তি উপলক্ষে সারাদেশে শহীদি মার্চ করা হবে। ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শহীদি মার্চ শুরু হবে। এ শহীদি মার্চে সব শহীদের পরিবারকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ছবি, উক্তিসহ বিভিন্ন স্মারক নিয়ে ছাত্র-জনতাকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিজ জায়গা থেকে শহীদি মার্চে অংশ নেবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরসহ দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শহীদি মার্চ পালিত হবে।’  
সরকার পতনের এক মাসের পূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের শহীদদের ছবি থাকতে পারে। যে কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে, সেসব কথা প্ল্যাকার্ডে থাকতে পারে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কী চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে কী চাই- এসবও থাকতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি, যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে এখনই তাদের স্মরণ করার সময়। এ জন্য বৃহস্পতিবার মাসপূর্তি উপলক্ষে সারাদেশে শহীদি মার্চ করা হবে। সব শহীদের পরিবারকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই। আমরা চাই, আগামীকালও সারাদেশে গণজোয়ার নামবে। বিকেল তিনটায় রাজু ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে শহীদি মার্চ শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘রক্তের দাগ এখনো শুকায় নাই। এখনো আমাদের ভাইয়েরা ক্ষত নিয়ে কাতরাচ্ছে। গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, কীভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে তার ডকুমেন্টেশন করতে হবে। অনেকে আমাদের বিজয় মিছিল করতে বলছে। কিন্তু যতদিন না নতুন বাংলাদেশ হচ্ছে, মানুষ অধিকার পাচ্ছে, ততদিন বিজয় মিছিল করা সম্ভব নয়।’

সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলব, তারা কী চায় সেটা জানব। আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’
কাউকে আইন নিজের হাতে না তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম যে বাংলাদেশ চায়, সেই বাংলাদেশকে সবাই স্বাগত জানাতে হবে। তাই আপনারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে সহায়তা করুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কারও অপরাধ খুঁজে পেলে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। যারাই জুলাই হত্যাকা-ে জড়িত ছিল, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত ১৬ বছরে দলের সংবিধানকে দেশের সংবিধান হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ একটি ধর্মে পরিণত হয়েছিল। সবকিছুকে আওয়ামীকরণ করা হয়েছিল। এখন এর থেকে বের হওয়ার জন্য সবাইকে এক হতে হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভাজনের সুর দেখা যাচ্ছে।

আর কখনো ফ্যাসিজম যেন ফিরতে না পারে সেজন্য সবাইকে এক হতে হবে। যারা ক্ষমতায় আসার আগেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে, তারা ক্ষমতায় গেলে কী করতে পারে তা চিন্তার বিষয়। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে পারে এমন গণমাধ্যম আমরা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, লুৎফর রহমান, তরিকুল ইসলাম, হাসিব আল ইসলামসহ প্রমুখ।

×