ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

সরকার শিক্ষকদের অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ৩ জুলাই ২০২৪

সরকার শিক্ষকদের অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে

রুহুল কবির রিজভী

ভারতের সঙ্গে করা চুক্তি-সমঝোতা অসম এবং দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। বাংলাদেশের জনগণ এহেন দুই সরকারের সমঝোতার উদ্যোগ অসম এবং বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী বলে মনে করে। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। 
সরকারকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, দুর্নীতির মহানায়ক হিসেবে যাদের নাম প্রচারিত হচ্ছে তারা সরকারি বড় বড় পদে থাকল কিভাবে? তিনি বলেন, আজকাল সংবাদপত্রের পাতায় দৃষ্টি দিলেই বেনজীর ও মতিউরসহ আরও কত নাম আমরা দেখতে পাচ্ছি। আগে তাদের নাম আসলো না কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে রিজভী বলেন, প্রত্যয় স্কিমের নামে শিক্ষকদের অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
রিজভী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো শক্ত মেরুদ- নেই। সরকারের নির্দেশমতো বিরোধী দলকে নির্যাতন করা দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ। তা না হলে ১৫-১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার যে অনিয়ম, অপচয় এবং দুর্নীতিকে দুর্নীতি দমন কমিশন কার্পেটের তলায় ঢেকে রেখেছে কেন? আর এই দুদকের মাধ্যমে  পুলিশ এবং সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সঠিক তদন্ত হবে বলে জনগণ বিশ্বাস করে না।

রিজভী বলেন, আজিজ, বেনজীরের মতো ব্যক্তিরা- যারা নিরস্ত্র গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে নিজ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেছিলেন, বন্দুক দেওয়া হয় কি ঘরে রাখার জন্য। অর্থাৎ দেশের সাধারণ নাগরিকদের নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের আন্দোলনকে কোনোপ্রকার মানবতার তোয়াক্কা না করে রক্তাক্ত পন্থায় দমন করার পুরস্কার হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের আশীর্বাদে তারা বিত্ত-বৈভবে প্রকা- স্ফীত হয়ে উঠেছিল। আলিশান বাড়ি, অসংখ্য ফ্ল্যাট, শত শত একর জমি তারা তখন করেছিল আন্দোলন দমনের কৃতিত্ব হিসেবে।  
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই দিল্লির অধীনতা বা বশ্যতা মানেনি এবং ভবিষ্যতেও মানবে না, যেমন পিন্ডির বশ্যতা মানেনি। অসংখ্য মানুষ আত্মাহুতি দিয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা, তাই এই স্বাধীনতাকে দুর্বল করা যাবে না। তিনি বলেন, বিএনপি শাসন আমলে কোনো ট্রানজিট আদায় করা ভারতের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ভারতের নীতি-নির্ধারকরা বাংলাদেশ এবং জনগণের প্রতি তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে।

অভিন্ন নদীর পানি, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্যিক ভারসাম্যসহ নানা সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয় তারা। ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের বুকচিরে রেললাইন স্থাপন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জনগণের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করার শামিল। বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই চুক্তি কোনোদিনই মেনে নেবে না।
রিজভী বলেন, চিরদিন কারও ক্ষমতা থাকে না, থাকবেও না। এই সরকারের পতন এবার হবেই। জনগণের উত্থানের মধ্যদিয়ে খুব দ্রুতই বর্তমান সরকারের পতন হবে। প্রতিটি অপকর্মের দায় এই সরকারকে নিতে হবে। কেউ কিন্তু তালিকার বাইরে থাকবেন না। 
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল আলম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।

×