ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১

রাসেলস ভাইপার গুজবে নির্বিচারে মারা হচ্ছে উপকারী সব সাপ

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ২৯ জুন ২০২৪

রাসেলস ভাইপার গুজবে নির্বিচারে মারা হচ্ছে উপকারী সব সাপ

 নির্বিচারে মারা হচ্ছে অন্য সাপ

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সাপ ধরা ও হত্যা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে সারা দেশে নির্বিচারে মারা হচ্ছে সাধারণ সাপ। গুজব সৃষ্টি করে একটি চক্র সাপ পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আক্রান্ত এলাকা থেকে সাপ উদ্ধার করছে তারা। এতে চিকিৎসা বিজ্ঞান ও কৃষিতে বড় ক্ষতি হতে পারে বলে শঙ্কায় আছেন গবেষকেরা।

চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম। কিছু দিন ধরে দেশের বিভিন্নস্থানে এ সাপ সাধারণ মানুষকে কামড় দিচ্ছে বলে প্রচার চালানো হয়। তবে এই সাপে দংশনের ঘটনা খুবই কম। এক ধরনের আতঙ্ক থেকেই যে কোনো ধরনের সাপ হত্যা করা হচ্ছে। এ প্রবণতায় মারা যাচ্ছে নির্বিষ সাপও।

এসব নির্বিষ সাপেদের মাঝে রয়েছে কৃষকের বন্ধু দাঁড়াস ও গুই, এছাড়াও বার্মিজ পাইথনসহ বেশ কয়েক জাতের সাপ রয়েছে। 

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটিক বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু রেজা জানান, সাপদের বৈচিত্র্য যদি হারিয়ে যায় তবে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের মূল উপাদানের অনেক বড় ঘাটতি পড়বে।

সাপ আতঙ্কের সময়টাকে কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে সাপ সংগ্রহে নেমেছে বেশ কিছু চক্র। অথচ সাপ ধরায় এদের নেই কোনো অনুমোদন। বন বিভাগ বলছে, কোথাও আক্রান্তের ঘটনা ঘটলে বন বিভাগের হট লাইনে তথ্য দিতে হবে।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, কোবরা ও ক্রেট প্রজাতির সাপ রাসেলস ভাইপার খেয়ে থাকে। যদি নির্বিচারে সাপ নিধনের সময় এ দুই প্রজাতির সাপ মেরে ফেলা হয়, তাহলে তো রাসেলস ভাইপার আরও বেড়ে যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ জামান বলেন, বাংলাদেশের সাপকূল যদি হারিয়ে যায়, তবে পরিবেশে একটি বড় বিপর্যয় দেখে দেবে। ইঁদুরসহ অন্যান্য পোকামাকড় অনেক বেড়ে যাবে, কমে যাবে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণও।

এদিকে বন বিভাগের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, সাপ আতঙ্কের সুযোগে একটি চক্র সাপ পাচারে নেমেছে। এ কারণে সবাইকে সাপ নিধনে আইন মেনে চলতে হবে। 

২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সাপ ধরা, আবাস নষ্ট ও হত্যা করলে এক বছর জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

বারাত

×