ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

মূল্যায়ন হচ্ছে না শিক্ষা-প্রশিক্ষণের

তদবিরে ভালো পদায়ন

তপন বিশ্বাস

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২৫ জুন ২০২৪

তদবিরে ভালো পদায়ন

সিভিল প্রশাসনে কর্মকর্তাদের যথাযথ পদায়ন হচ্ছে না

সক্রিয় আমলাদের চক্র ॥ চেয়েও যোগ্য কর্মকর্তা পাচ্ছে না মন্ত্রণালয়

সিভিল প্রশাসনে কর্মকর্তাদের যথাযথ পদায়ন হচ্ছে না। মূল্যায়ন হচ্ছে না প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে কাজে লাগছে না শিক্ষা-প্রশিক্ষণ। এমনকি চাকরি জীবনের প্রশিক্ষণেরও গুরুত্ব নেই পদায়নের ক্ষেত্রে। কোনো কোনো মন্ত্রণালয় চেয়েও যোগ্য কর্মকর্তা পাচ্ছে না। আমলাদের প্রভাবশালী গ্রুপের আস্থাভাজন হলেই মিলছে গুরুত্বপূর্ণ পদ। সরকারের প্রায় সকল মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। এতে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে যোগ্য কর্মকর্তাদের সেবা থেকে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ।

থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি) থেকে জ্বালানি অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন উপসচিব মোহাম্মদ রুবায়েত খান। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে করেছেন এমএ। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ করেছেন। দায়িত্ব পালন করছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে। পরে তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বদলি করা হয়।
এই কর্মকর্তার লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ ছিল না এসব স্থানে। গত বছরের শেষ দিকে রুবায়েত খানকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়নের অনুরোধ জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি দেন অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। পরে রুবায়েত খানকে পদায়ন করা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। তিনি এখন অর্থ বিভাগের বাজেট শাখায় কর্মরত।
অর্থ সচিবের উদ্যোগে উপসচিব রুবায়েত খান উপযুক্ত স্থানে পদায়ন পেলেও অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সঙ্গে পদায়ন সম্পর্কযুক্ত নয়। সরকারের অর্থ ব্যয় করে নেওয়া শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ যাচ্ছে বিফলে, কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারছেন না কর্মকর্তারা।
সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনে উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত ব্যক্তিকে পদায়নের মূল অন্তরায় রাজনীতিকীকরণ। এখন পদায়ন হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। দলীয় আনুগত্য না হলে যতই যোগ্য হোক, ভালো পদায়ন পাওয়া যায় না। অনেকের যোগ্যতা না থাকলেও তদবিরের জোরে বাগিয়ে নিচ্ছেন ভালো পদ।
তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদায়নের বিষয়টি অস্বীকার করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তিকে পদায়নে সরকার আন্তরিক।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘রাইট পারসন রাইট প্লেস’ নিশ্চিতের বিষয়ে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে ১২ কর্মকর্তাকে অর্থ বিভাগে পদায়নের অনুরোধ জানিয়ে অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে দুটি চিঠি পাঠান। এর মধ্যে মাত্র তিনজন কর্মকর্তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়।
এদিকে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে কাজে লাগছে না শিক্ষা-প্রশিক্ষণ। জাপানের ন্যাশনাল গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিস (জিআরআইপিএস) থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন যুগ্মসচিব মো. সিদ্দিকুর রহমান। দারিদ্র্য নিরসনের ওপর তার রয়েছে বিশেষ জ্ঞান। এ বিষয়ে গবেষণাও রয়েছে তার। বর্তমানে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) এমডিএস (এমঅ্যান্ডডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন উপসচিব মোস্তাক আহমেদ। এ ছাড়া ঢাবি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। দায়িত্ব পালন করছেন বিপিএটিসির পরিচালক (পরিমাণগত পদ্ধতি) হিসেবে।
ঢাবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ থেকে এমবিএ করেছেন উপসচিব মো. জসিম উদ্দিন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যাডফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমএসসি করেছেন ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফিন্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে। এখন দায়িত্ব পালন করছেন আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) উপ-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. ইবাদত হোসেন। জাপানের ইয়ামাগুচি ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।
উপসচিব মোহাম্মদ রেজাউল হক আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিষয়ে এমএ করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব গ্রিনউইচ থেকে। এছাড়া ঢাবি থেকে ফিন্যান্সে এমবিএ করেছেন। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের উপসচিব (সংযুক্ত) হিসেবে। 
মো. জহিরুল হক ঢাবি থেকে ফলিত গণিতে এমএসসি ডিগ্রি নিয়েছেন। কর্মরত আছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে। মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ করেছেন। বর্তমানে তিনি পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির সহকারী পরিচালক (সিনিয়র সহকারী সচিব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তানিয়া মুন। এ কর্মকর্তা যুক্তরাজ্যের সাসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে এমএসসি করেছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিশেষায়িত মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয় দেশের বাজেট প্রণয়নসহ অর্থ সংশ্লিষ্ট নানা কাজ করে। ফলে যাদের লেখাপড়া ও প্রশিক্ষণ অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট, তাদের পক্ষে গুণগত মান রক্ষা করে এ বিভাগের কাজগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব। এসব বিবেচনায় নিয়ে কাজের সুবিধার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে যোগ্য কর্মকর্তা চায় অর্থ বিভাগ, তবে তা মেলেনি।
কয়েক মাস আগে ১২ কর্মকর্তাকে অর্থ বিভাগে পদায়নের অনুরোধ জানিয়ে অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে দুটি চিঠি পাঠান। এর মধ্যে মাত্র তিনজন কর্মকর্তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়। চিঠিতে অর্থসচিব লেখেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) ও মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) প্রণয়ন এবং তা হালনাগাদ, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক নীতিকৌশল বাস্তবায়নে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সংশ্লেষ এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করা অর্থ বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

এছাড়া সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অংশীজনদের দ্বারপ্রান্তে সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের মতো অর্থ বিভাগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমি মনে করি, সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার চলমান সংস্কার অব্যাহত রাখার স্বার্থে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে উদ্ভূত নানামুখী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রায়োগিক অর্থনীতি, উন্নয়ন অর্থনীতি এবং পাবলিক ফিন্যান্স বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনকারী কর্মকর্তাদের অর্থ বিভাগে পদায়ন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা ব্যবহার করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা এবং টেকসই করাও জরুরি।’
অর্থসচিব যেসব কর্মকর্তার তালিকা দিয়েছেন, তারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি, অর্থনীতি, উন্নয়ন অর্থনীতি, ব্যবসা প্রশাসন, উন্নয়ন অধ্যয়ন এবং ফলিত গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পাশাপাশি এসব কর্মকর্তা আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দেশে-বিদেশে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।
ওই কর্মকর্তাদের অর্থ বিভাগে পদায়নে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিবের ব্যক্তিগত দৃষ্টি আকর্ষণ করে অর্থ সচিব লেখেন, ‘তাদের পদায়ন করা হলে তারা অর্থ বিভাগের কাজে সম্পৃক্ত থেকে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় গুণগত মান বাড়াতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অনুযায়ী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদায়ন না পাওয়ার বিষয়ে সাবেক সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদায়ন। পাশাপাশি সরকারের আস্থাভাজন আমলাগ্রুপের নেতাদের ¯েœহধন্য হলে মেলে ভাল পদায়ন। সে ক্ষেত্রে সরকারের নীতি-আদর্শের পরিপন্থি কর্মকর্তাও সরকারের আস্থাভাজন বনে কাঙ্খিত পদায়ন পেয়ে যান। এখন তো যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন হয় না। কে সরকারের আদর্শে বিশ্বাসী, কার তদবিরের জোর কত- পদায়ন হয় এটার ওপর ভিত্তি করে। এটাই হচ্ছে সমস্যা। রাজনৈতিক বিবেচনা উঠে গেলেই যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পদায়ন সম্ভব হবে।
সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান বলেন, সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় পদায়নে সরকারের সদিচ্ছাই মূল বিষয়। সরকার যদি সঠিক জায়গায় যোগ্য ব্যক্তিকে না দেয় তবে কী করার আছে, প্রশাসন তো সরকারের অধীন।
তিনি বলেন, যোগ্য ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় বসানোর ক্ষেত্রে ক্ষমতাধর কিছু কর্মকর্তা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে। এদিয়ে তো সুশাসন হতে পারে না। কিন্তু ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর দলীয়করণ শুরু হলো, ফলে কারও জনতার মঞ্চ, কারও অনেক রাতে মুখ ঢেকে পালানোর মঞ্চ হলো। তখন থেকে আর যোগ্যতা ও অযোগ্যতার প্রশ্ন নেই। 
প্রশাসনের মানুষগুলোও এখন বুঝে গেছে, দল করলে মজা আছে। শুধু ভালো পোস্টিং না, মেয়াদ শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া যায়। বছরের পর পর সেই মেয়াদ বাড়ানো যায়। এভাবে অনেক আমলা যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাদের দলে মিশে যাচ্ছে এবং সরকারের কাছ থেকে সুবিধা বাগিয়ে নিচ্ছে।
সাবেক এ আমলা বলেন, দলীয় লোক যোগ্য হলে তাকে যোগ্য জায়গা দেওয়া দোষের কিছু নয়। কিন্তু ক-বোঝে না, খ-বোঝে না, খালি দল বোঝে। তাহলে তাকে উঠিয়ে দেওয়া হলে সমস্যা। আবার শুনলেন কেউ বিরোধীদলের, তাকে বঞ্চিত করলেন- এটা হলো অপরাজনীতি। মূল সমস্যা হলো এটি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তিকে পদায়নের প্রাকটিসটা আমরা করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে যাতে আরও গুরুত্ব দিতে পারি, সেজন্য একটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছি। এটার (সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি) তিনটি কম্পোনেন্ট রয়েছে। একটি হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, আরেকটি অর্গানাইজেশন ম্যানেজমেন্ট। এছাড়া আরেকটি বিষয় থাকবে তা হলো পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্ট।
অর্গানাইজেশন ম্যানেজমেন্টের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। অধীন দপ্তর-সংস্থার আকার কেমন হবে, কী ধরনের কাজ হবে, কোন ধরনের যোগ্যতার লোক লাগবে- এসব বিষয় আমরা অটোমেশনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করব, যাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এর মাধ্যমে মন্ত্রণালয়, বিভাগগুলো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। সময় বাঁচবে, দক্ষতা বাড়বে। সফটওয়্যারটি পরীক্ষামূলক চলছে।
এই সিনিয়র সচিব বলেন, কর্মকর্তাদের যেসব তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, সেখানে আগে ৫৮টি ক্ষেত্রে তথ্য রাখা হতো। এখন প্রায় সাড়ে চারশ’ ক্ষেত্রে তাদের তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এত তথ্য থাকায় সঠিক স্থানে সঠিক ব্যক্তিকে পদায়ন করা সম্ভব হবে। এতে কর্মদক্ষতা বাড়বে।
অর্থ বিভাগ কর্মকর্তা চেয়েও পায়নি- এ বিষয়ে মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে একমত পোষণ করি, পাশাপাশি দ্বিমতও পোষণ করি। যারা অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে বাইরে পড়াশোনা করে এসেছেন, সে ধরনের ডিগ্রিগুলো রয়েছে, এর মানে এই নয় যে তাদের সবাইকে অর্থ বিভাগে কাজ করতে হবে। যারা দক্ষ কর্মকর্তা তাদের একটি-দুটি মন্ত্রণালয় নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে রাখতে চাচ্ছি। এতে সব জায়গায় তারা পারফর্ম করতে পারবে। যে যে বিষয়ে লেখাপড়া বা প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাকে সেই সংশ্লিষ্ট দু-একটি মন্ত্রণালয়ে সবসময় দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ আমরা সব মন্ত্রণালয়কে সমভাবে সেবা দিতে চাই।

×