ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ আলোচনা

ব্যালটের রায়ে ক্ষমতায় আসার শক্তি নেই বিএনপির

সংসদ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১২, ৩ মার্চ ২০২৪

ব্যালটের রায়ে ক্ষমতায় আসার শক্তি নেই বিএনপির

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, জনগণের ব্যালটের রায় নিয়ে বিএনপির ক্ষমতায় আসার শক্তি বা সামর্র্থ্য নেই। জনগণের মুখোমুখি হতে তারা ভয় পায় বলেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনকে বানচাল করতে ভয়াল নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল। কিন্তু দেশের জনগণ তাদের নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের পক্ষেই গণরায় দিয়েছেন।
প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে শনিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সরকারি দলের রূমা চক্রবর্তী, সানজিদা খানম, আহমেদ ফিরোজ কবির, আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক, হাছিনা বারি চৌধুরী, মাহফুজা সুরতানা, পারভীন জামান ও মাসুদা সিদ্দীক রোজী। 
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বেইলি রোডের অগ্নিকা-ে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনার হাতে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ধ্বংস হয়েছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বড় বড় অপরাধীদের বিচার হয়েছে। সেক্ষেত্রে দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। কিন্তু কিছু কিছু  জায়গায় আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
তিনি বলেন, বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছিলাম। তদন্ত করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে আমরা রিপোর্ট দিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরও সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তার পর চার্জশিট দেওয়ার সময় অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয় আজকে পর্যন্ত সে মামলার অভিযোগ গঠন পর্যন্ত হয়নি। নারায়ণগঞ্জে একটি ফ্যাক্টরিতে ৫২ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা  হলো (২০২১ সালে)।

সে মামলার আসামিরা জেলে গেছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ রকম অনেক ঘটনা। সাবেক গৃহায়ণ মন্ত্রী আরও বলেন, এ জায়গায় আমার দাবি এ জাতীয় অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে তাদের বিচার করা না হলে শুধু এই অপরাধ নয় অন্যদের কাছে একটা মেসেজ যাবে না। আমরা সে সময় ১৩০০ ভবনকে চিহ্নিত করেছিলাম গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে, যে মন্ত্রণালয়ের প্ল্যান ঠিক নাই যে ভবনের অধিকাংশ ফ্লোর অননুমোদিতভাবে করা হয়েছে, সে ভবনগুলো কিন্তু ভাঙা সম্ভব হয়নি। এটাও কিন্তু এক প্রকার দায়মুক্তি দেওয়া।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভালো কাজ করলে অবশ্যই প্রশংসিত হবেন। কিন্তু কাজে গাফিলতি প্রদর্শন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে। সারা বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ আর ১৫ বছরের বাংলাদেশ এক নয়। দেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, প্রতিটি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতাও কামনা করেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে না। এ কারণে তারা নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু অগ্নিসন্ত্রাস বা নাশকতা নয়, দেশের জনগণই মূল শক্তি এটা বিএনপি বন্ধুদের বুঝতে হবে। দেশের জনগণ গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তাদের নেতিবাচক রাজনীতি আবারও প্রত্যাখ্যান করেছে। 
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমা চক্রবর্তী বলেন, জনগণের ব্যালটের রায় নিয়ে বিএনপির ক্ষমতায় আসার শক্তি বা সমর্থন নেই। এটা বুঝতে পেরেই  তারা নাশকতা, ধ্বংসযজ্ঞ ও অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের জনগণ তাদের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছে। 
সংরক্ষিত আসনের এমপি নাছিমা জামান ববি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতে দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে না এসে নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু দেশের জনগণ বিএনপি- জামায়াতের অপরাজনীতিতে সমর্থন না দিয়ে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, জনগণের মুখোমুখি হতে বিএনপি ভয় পায়, অতীত নেতিবাচক রাজনীতির জন্য জনগণের সামনে তাদের মুখ দেখানোরও জায়গা নেই। তাই তারা নির্বাচন বর্জন করে বানচালের নামে নাশকতার পথ বেছে নিয়েছিল। কিন্তু দেশের জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছে।

×