হাইকোর্ট
সাবেক সংসদ সদস্য পারভীন হক সিকদারের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা’ ও ‘সরকারি তহবিল খরচের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
একাদশ জাতীয় সংসদে পারভিন হক সংরক্ষিত নারী আসনের (শরীয়তপুর) সংসদ সদস্য ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিত্ব ত্যাগ না করে তিনি সংসদ সদস্য হন উল্লেখ করে পারভিন হকের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা’ ও ‘পাবলিক ফান্ড খরচের’ অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে সম্প্রতি আসিফ সরকার নামে শরীয়তপুরের একজন ভোটার দুদকে আবেদন দেন। এতে ফল না পেয়ে তিনি ওই রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে আইনজীবী সাজ্জাদ হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানিতে ছিলেন।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে পারভিন হক সিকদার যক্তরাষ্ট্রের নাগরিক থাকা সত্ত্বেও তা প্রত্যাহার না করে তথ্য গোপন করে রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণামূলকভাবে সংসদ সদস্য পদে থাকেন। এটি সাংবিধানিকভাবে একটি অপরাধ। এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবেও গণ্য হয়। অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সংসদীয় সুবিধা, সন্মানি, শুল্কমুক্ত গাড়ি সুযোগ–সুবিধা তিনি ভোগ করেন।
এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনে লিখেছেন। দুদকেও আবেদন দেন। ফল না পেয়ে রিটটি করেন। হাইকোর্ট রুল দিয়েছেন এবং দুদককে ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রিট আবেদনকারীর লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তি করতেও বলা হয়েছে।
দুদকে করা লিখিত অভিযোগ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল পারভিন হক সিকদারকে দশ বছরের জন্য পাসপোর্ট দেয়। এর মেয়াদ চলতি বছরের ৬ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এই তথ্য গোপন করে একাদশ সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে (শরীয়তপুর) তিনি ২০১৯ সালে মনোনয়ন দাখিল করেন।
পারভিন হক তার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেননি; এমনকি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত বিধান লঙ্ঘন করে ২০১৯ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন; তিনি ‘রাষ্ট্রের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত প্রতারনার’ মাধ্যমে আনুষাঙ্গিক সুবিধা লাভ করেন, ফলে সরকারি কোষাগারের তসরুপ হয়েছে।
এস