মালয়েশিয়াগামী কর্মীরা
বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ধারাবাহিকতায় বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনায় চতুর্থ ধাপে যাচ্ছে আরো ১১৯ কর্মী। মালয়েশিয়ার নেশনগেট সলিউশন কোম্পানিতে ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’ প্রোগ্রামের আওতায় যাচ্ছেন এই কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. রুহুল আমিন কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট ও বিএমইটি’র ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড বা বিএমইটি স্মার্ট কার্ড হস্তান্তরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাবেন এই ১১৯ কর্মীর মধ্যে ৬৯ জন ১৬ ফেব্রুয়ারি ও বাকি ৫০ জন ২৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়া যাচ্ছেন।
এদিকে, বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) রাজধানীর বসুন্ধরা বানিজ্যিক এলাকায় ক্যাথারসিস কম্প্লেক্সে প্রি – ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করা হয়। কর্মী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাসহ এই প্রক্রিয়ায় আরো বেশি কর্মী নিতে ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে কর্মীদের কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান নেশনগেট সলিউশন-এর এইচ আর ম্যানেজার আল ফাজুলি বিন ফুযান। এসময় তিনি ঢাকায় যাতায়াতের খরচ বাবদ কোম্পানির পক্ষ থেকে ৩ হাজার টাকা করে দেন কর্মীদের নেশনগেট সলিউশন-এর এইচ আর ম্যানেজার বলেন, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় বিনা খরচে কর্মী নেয়ার এই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার জন্য ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালকে ধন্যবাদ। এছাড়া কর্মীরা যে বিনা খরচে যাচ্ছে এটা নিশ্চিত করার জন্যও এই আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর কর্ণধার ও বায়রা’র সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন বলেন, বিনা খরচে কর্মী পাঠানো এই প্রক্রিয়া আরো সমৃদ্ধ করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এই কাজে যেই সহযোগিতা করে আসছে, সেটি অতুলনীয় একইসাথে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বিএমইটির সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান রুহুল আমিন স্বপন জানান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাত ও রিক্রুটিং এজেন্সির সুনাম বাড়াতে বিনা খরচে আরো বেশি সংখ্যায় কর্মী পাঠানোর জন্য এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছাতা নিশ্চিত করতে কর্মীদেরও সচেতন হতে হবে ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর কর্ণধার রুহুল আমিন স্বপন বলেন, “কোন কর্মীর কাছ থেকে কেউ একটি টাকাও নিয়ে থাকলে, সেটি আমাদের জানাতে হবে এখানে কোন অস্বচ্ছতা থাকলে, এই সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে যাবে তাই কর্মী দেশে থাকা পর্যন্ত আমাদের কাছে বলা মাত্রই, তার টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে কারণ এখানে মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতা কোম্পানী সব খরচ বহন করছে আমরা চাই মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বিশ্বাস করুক যে বাংলাদেশ থেকেও বিনা খরচে কর্মী পাঠানো সম্ভব”
গেল বছরের ১৯ জুন (২০২৩) প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয় ২০ কর্মীকে। এর মাধ্যমে ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’ কর্মসূচিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ আগে এই সুযোগ পেত নেপাল বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও জেজি আল ফালাহ ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনায় কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যায়।
এরপর ২৭ আগস্ট ২০২৩ দ্বিতীয় ধাপে আরো ৩১ কর্মী সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া যায় । বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও ব্যবস্থাপনায় এই কর্মীরা মালয়েশিয়া যায়। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইটির সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা ও বিএমইটি’র ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিদায় জানান বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন স্বপনসহ বায়রা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
তৃতীয় পর্যায়ে ২১ ডিসেম্বর (২০২৩) ৬৫ কর্মীর আরেকটি দল সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় একদিন আগে, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা ও বিএমইটি’র ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড তুলে দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মীদের দেশটির আইন ও নিয়মনীতি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
বড় সংখ্যাক এই কর্মী ছাড়াও এখন পর্যন্ত ৪ শতাধিক বাংলাদেশি এই ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’ কর্মসূচির মাধ্যমে মালয়েশিয়া গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন স্বপন।
কম খরচে বিদেশে কর্মী পাঠাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের বাস্তবায়নের জন্য এই পদ্ধতি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং বাংলাদেশি কর্মীদের অভিবাসন খরচ হ্রাস পাবে ও রেমিট্যান্স আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। এছাড়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এস