ভূমি মন্ত্রণালয়।
‘৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ের পর বাতিল হচ্ছে ডিজিটাল ভূমি জরিপ প্রকল্প’ শিরোনামে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া, এমন একটি তথ্য আরো বিভিন্ন উপায়ে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। আর এই জরিপ প্রকল্প বাতিলের এ তথ্য সঠিক নয়, গুজব বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করেছে মন্ত্রণালয়। দাবি করা হয়, প্রকৃত তথ্য হচ্ছে সমগ্র বাংলাদেশে দক্ষভাবে জরিপ পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ প্রোগ্রাম মূলত দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পাদন করা হচ্ছিল। এর একটি হচ্ছে 'ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (সিডিপি প্রকল্প) এবং অপরটি হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে ৩টি সিটি কর্পোরেশন, ১টি পৌরসভা এবং ২টি গ্রামীণ উপজেলার ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি স্থাপন প্রকল্প (ইডিএলএমএস প্রকল্প)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিডিপি প্রকল্পে ৩৩৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রকল্পে গাড়ি, অফিস সরঞ্জাম, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা এবং প্রশিক্ষণে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা। দেখা যায় প্রকল্পের মোট ১ হাজার ২১২.৫৫ কোটি টাকার বিপরীতে ৩ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা অর্থাৎ ০.৩০ শতাংশ আর্থিক ব্যয় করে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ০.২৮ শতাংশ। প্রসঙ্গত, সিডিপি প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া মৌজায় ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক জরিপ কাজ শেষ হয়েছে।
এছাড়া প্রায় ১ বছর প্রকল্পটি ‘গ’ ক্যাটাগরির প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকার ফলে কোনো বাস্তব অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। শুধু চলমান অর্থবছরে এ প্রকল্পের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়। যেহেতু প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাবনা করা হয় তাই কোনো ভৌতিক ও আর্থিক অগ্রগতি প্রচেষ্টা চালানো হয়নি। সিডিপি প্রকল্প স্টাডি করে অধিকতর দক্ষ করে নতুনভাবে প্রস্তাব করা হবে।
ইডিএলএমএস প্রকল্পটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ৫টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে। যার অগ্রগতি ২৪% এর উপরে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম বর্তমানে পুরোদমে চলমান।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও তথ্য প্রচারের মাধ্যমে গণমাধ্যম দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম এবং অসম্পূর্ণ তথ্য জনগণের মাঝে অযৌক্তিক আতঙ্ক তৈরি করে। জনসাধারণের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক এবং ভুল বোঝাবুঝি এড়ানোর জন্য প্রদত্ত তথ্যের যথার্থতা এবং ন্যায্যতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনলাইনে ভূমি বিষয়ক যেকোনো বিভ্রান্তিকর সংবাদ/তথ্য দেখলে তা যাচাই করতে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করা কিংবা ভূমি মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক পোর্টালে ভিজিট করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এম হাসান