প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুন : আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উপযোগী পরিবেশে পরিকল্পিত উপায়ে পাহাড়ি ফসল, জুম চাষ ও সম্পদ উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকরা যাতে স্বাবলম্বী হতে পারে সেরকম অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। দেশের পাহাড়-পর্বত সুরক্ষায় অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, এবারের আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশের অবক্ষয় না ঘটিয়ে পাহাড়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে সব মানুষের সুষম জীবন বিকাশে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবন অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। পর্বতমালা, নদ-নদী, বহু প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী এ অঞ্চলকে করেছে বৈচিত্র্যপূর্ণ। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন অপরিহার্য। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড় ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ, এর টেকসই ব্যবহার এবং সব উপকারভোগীর কাছে সমান সুবিধা পৌঁছানোর লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আধুনিকতার ছোঁয়া বিবর্জিত পশ্চাৎপদ পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন এবং পার্বত্যবাসীর জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের সমান সুযোগ প্রদানের ব্যবস্থা নেন। এলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের জুন মাসে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুনির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির সহিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির স্বাক্ষরিত চুক্তি” শিরোনামে একটি শান্তির দলিল সম্পাদন করেছে। এ চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘদিনের বিরাজমান সংঘাতের অবসান ঘটেছে। পার্বত্যবাসীরা এখন পরস্পর সহমর্মিতা, আন্তরিকতা ও শান্তির সঙ্গে বসবাস করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তি চুক্তির আলোকে গত ১৫ বছর ধারাবাহিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যার ফলে পার্বত্য এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎখাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। পার্বত্যবাসীদের দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ সেখানে বসবাসরত মানুষের জীবনমানের উন্নতি হয়েছে। আমরা পার্বত্য এলাকায় বনায়ন, জীববৈচিত্র্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থার উন্নয়নসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সকল খাতের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছি। ফলে পার্বত্য অঞ্চল আজ পিছিয়ে পড়া কোনো জনপদ নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ এলাকার জনগণ সমঅংশীদার।’
এবি