মেট্রোরেলে কোম্পানির বিজ্ঞাপনের পোস্টার।
মেট্রোরেল নির্মাণের সময় থেকেই কর্তৃপক্ষ থেকে বলে আসা হচ্ছিল এর পিলার ও ট্রেনে কোনো ধরণের পোস্টার বা লিফলেট লাগানা নিষেধ। কিন্তু, হঠাৎ করেই মেট্রো ট্রেনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে কোনো কম্পানির বিজ্ঞাপনের পোস্টার। আর তা নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এ ধরণের বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতায় মেট্রোরেলের ছবি পোস্ট করে নানা ধরণের আলোচনা ও সমালোচনা করছেন। এমনকি বিজ্ঞাপনের এই বিষয়টিকে ‘বস্তি’ বলেও মন্তব্য করছেন যাত্রীরা। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন এ বিষয়ে ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং বিজ্ঞাপনদাতা দুইজনেরই রুচিবোধ, ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিংয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মনে হচ্ছে ফার্মগেটে কোনো দেয়ালের ওপর পোস্টার লাগানো হয়েছে। এতো সুন্দর একটা উদ্যোগ, এভাবে নষ্ট করা উচিত না।’ফেসবুকে ইয়াশ আহমেদ লেখেন, ‘মেট্রোরেলে বিজ্ঞাপন নতুন কিছু না। পৃথিবীর সব মেট্রোই বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, এতো বস্তির মতো অন্য কোনো দেশ ব্যবহার করে কিনা আমার সন্দেহ আছে। কোনে গাধার মাথায় এই মার্কেটিং আইডিয়া আসছে আল্লাহ ভালো জানে। মেট্রোতে ঢুকে আঠা দিয়ে কয়েকটা পোস্টার লাগায়া দিলেই আমার সেল বেড়ে ৪০০% হয়ে যাবে এটা গাধা ছাড়া কেউ ভাবতে পারে না। এইভাবে চলতে দিলে কয়েকদিন পরে কলিকাতা হারবালও নিজেদের পোস্টার লাগায়া দিবে। আপনি মেট্রোতে ছবি তুলবেন বাসায় গিয়ে দেখবেন ছবির পেছনে লেখা, 'আপনি কি যৌন সমস্যায় ভুগছেন? সুন্দর একটা প্রোজেক্টরে নষ্ট করল।’
উল্লাস দে শোভন লেখেন, ‘দেখতে পুরো তুরাগ বাসের পেছনে যেমন 'দোয়া চাই ' পোস্টার এলোমেলোভাবে লাগানো থাকে তেমন। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আপনাদের ভালোমন্দ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন অগোছালো পোস্টার। এতো জঘন্য ডিজাইন হতে পারে না। এতো সুন্দর উদ্যোগ বাংলাদেশে খুব কমই হয়েছে। এগুলোর যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সুন্দর কিছুর মধ্যে যদি অসুন্দর কিছু ঢুকিয়ে দেন তাহলে তা কেমন দেখায়?’
নাহিদুর রহমান লেখেন, ‘মেট্রোরেলকে যারা বস্তি বানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তাদেরকে আল্লাহ হেদায়েত দেক।’ আর এভাবেই সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা করা হচ্ছে।
মেট্রোরেল প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর বেশি ভাড়া, টয়লেট ইজারা, সংশ্লিষ্টদের কয়েকজনের বাজে আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তবে স্টেশনের স্থাপনা, সেবা সম্পর্কিত প্রশ্নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।
বিজ্ঞাপনের বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানি সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘আমরা আইনসম্মতভাবে এক বছরের জন্য বিজ্ঞাপনের টেন্ডার বরাদ্দ দিয়েছি। আমাদের ডিসপ্লেতেও বিজ্ঞাপন প্রচার হবে। বিজ্ঞাপন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয়ের একটি উৎস। সারা বিশ্বেই এটা আছে। আয় না হলে যাত্রীদের ভাড়ার খরচ বেড়ে যাবে।’
এম হাসান