ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তাই উদ্দেশ্য 

এআইআইবি ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

এআইআইবি ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বাংলাদেশে

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। ব্যাংকটি (এআইআইবি) চীনের প্রস্তাবিত একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থ সহায়তা করাই এই বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকের উদ্দেশ্য। ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতি অনুসারে প্রতি ডলারের দাম ১০৮ টাকা ৮৪ পয়সা ধরা হলে বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪৮ হাজার ৮১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই টাকা পাবে বাংলাদেশ। এই অর্থ পাওয়ার বিষয়টি পাইপলাইনে রয়েছে।
এআইআইবির বোর্ড অব ডিরেক্টরস এবং ৮ম বার্ষিক সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। মিসরের শারম আল শেখে ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বার্ষিক সভায় জলবায়ু অর্থায়ন এবং পাবলিক ও প্রাইভেট বিনিয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ খাতে ১৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এআইআইবির বিনিয়োগ শুরু হয়েছিল। প্রথম ৩ বছরে এআইআইবির অর্থায়ন ছিল ৪টি প্রকল্পের বিপরীতে ৪৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বর্তমানে ১৮টি প্রকল্পের বিপরীতে ৩ হাজার ২৭০ মিলিয়ন ডলার।
অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়েছে, আগামী ৫ বছরের জন্য এআইআইবির অর্থায়নে বাংলাদেশের পাইপলাইনে ৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। যা বাংলাদেশে আগামী ৫ বছরে জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় অর্থায়ন এবং পাবলিক ও প্রাইভেট বিনিয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

এআইআইবির সভায় বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে। শরিফা খান সভায় জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো নির্মাণে অধিক অর্থায়নের জন্য আহ্বান জানান।
এবারের বার্ষিক সভার মূল প্রতিপাদ্য ‘সাসটেইন্যাবল গ্রোথ ইন এ চ্যালেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে শরিফা খান বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়, উন্নত থেকে উন্নয়নশীল সব দেশই এই মুহূর্তে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যার বেশিরভাগই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ইত্যাদির কারণে উদ্ভূত। বিশেষ করে জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো নির্মাণ বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবার ঝুঁকিতে আছে। তাই বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন এবং আসন্ন সংকট এড়াতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ন্যায্য অংশীদারত্বের বিষয়ে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সভায় এআইআইবি সভাপতি এবং বোর্ডের চেয়ারম্যান জিন লিকুন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সদস্যদের প্রচেষ্টায় একযোগে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আগামী জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এআইআইবি সদস্যদের পাশে থাকবে। আমাদের অবশ্যই গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন দ্রুত কমাতে, আবহাওয়ার চরম অবস্থায় শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং পৃথিবীতে জীবনকে সম্ভব করে তোলে এমন প্রাকৃতিক পুঁজিকে রক্ষা করতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল গভরনরস বিজনেস রাউন্ড টেবিল, সেমিনার, গভরনরস অফিসিয়াল সেশনে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের বিনিয়োগ অপারেশন অঞ্চল ১- দক্ষিণ এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

×