মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
দেউলিয়া হতে যাওয়া প্রতিষ্ঠান থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
মঙ্গলবার (১৬ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৩ বছরের কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
বিগত মেয়রের সময়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বকেয়া প্রায় সব টাকা পরিশোধ করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চলতি বছরে ৮২৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ঢাকা শহরে এ পর্যন্ত ৩৪ একর জমি উদ্ধার করা হয়।
হাটার রাস্তা নিশ্চিত করার জন্য দখল মুক্ত করা হয়েছে অনেক স্থান উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ঢাকাকে সুন্দর নগরীতে পরিণত করার জন্য উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩ বছরে ৩৬টি ওয়ার্ডে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের ফলে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮-তে উন্নীত হয়েছে। অথচ আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২২। এছাড়াও বাকি ওয়ার্ডগুলোতেও অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলমান। আমরা ৭৫টি ওয়ার্ডে প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহকারী নিবন্ধনের মাধ্যমে সকল বাসা-বাড়ি ও স্থাপনা থেকে দৈনিক ভিত্তিতে বর্জ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করেছি। বর্তমানে দৈনন্দিন ভিত্তিতে রাত ৯টা হতে ভোর ৬টার মধ্যে সকল রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাসিক ভিত্তিতে দুইবার সকল উন্মুক্ত নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গ টেনে দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গত ৩ বছরে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা শহর এখন আর ডুবে যায় না। ধানমন্ডি-২৭, পলাশী মোড়, আজিমপুর মোড়, শান্তিনগর, রাজারবাগ, সচিবালয়, মতিঝিল এলাকা বিশেষত নটরডেম কলেজের সামনের অংশ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনের রাস্তা, সূত্রাপুর শিল্পাঞ্চল এখন আর পানিতে ডুবে যায় না। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যেত আমাদের প্রিয় এই শহর। জলমগ্ন হয়ে পড়তো নগরীর প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা। কিন্তু দায়িত্বভার গ্রহণের পর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।
মেয়র বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পরের দিন থেকে এসব খাল, বক্স কালভার্ট ও নর্দমা হতে বর্জ্য অপসারণ, সীমানা নির্ধারণ ও দখলমুক্তি কার্যক্রম শুরু করি। এ সকল খাল, কালভার্ট ও নর্দমা হতে ২০২১ সালে ৮ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন এবং চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য ও পলি অপসারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন শ্যামপুর, মান্ডা, জিরানী ও কালুনগর এই চার খালের বর্জ্য ও পলি অপসারণ এবং খাল সংস্কার করে নান্দনিক পরিবেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া এই চারটি খালের নকশা, অঙ্কন ও জরিপ কাজ চলমান রয়েছে। একইসাথে এ সকল খাল হতে বর্জ্য অপসারণ ও ভূমি উন্নয়নের লক্ষ্যে দরপত্র কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
যেখানেই দুর্নীতির চক্র ছিলো তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আছে।
এমএস