ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ‘স্মার্ট’ হওয়ার পথে দেশ
ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ‘স্মার্ট’ হওয়ার পথে দেশ। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে যোগাযোগ, শিক্ষা, বাসস্থানসহ প্রায় সব মৌলিক চাহিদায়। তবে সবচেয়ে বেশি যে খাতে আধুনিকতা আনার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে, সেটি হচ্ছে দেশের স্বাস্থ্যখাত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের স্বাস্থ্য খাতে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল অট্টালিকা। কিন্তু সেই তুলনায় বাড়েনি সেবার মান। ফলে বছরে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে পাড়ি জমায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশে।
এমনকি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মন্ত্রী, এমপিরা মুখে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের কথা বললেও তাদেরও দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি নেই ন্যূনতম আস্থা। আর তাই সাধারণ অসুখ-বিসুখে চিকিৎসার জন্য যান ভারত-সিঙ্গাপুরে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে সঠিক রোগ নির্ণয়ে অনাস্থা, রোগীদের প্রতি অনেক চিকিৎসকের মনোযোগের অভাবকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা। দেশে বিভিন্ন রোগের আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও কেন প্রতিবছর এত মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়-এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অনেক সময় অজ্ঞতার কারণে রোগীরা সঠিক চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ভুল জায়গায় চিকিৎসা নিতে যান। এতে হিতে বিপরীত ঘটে। তাছাড়া রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাও দক্ষ বিশেষজ্ঞ দিয়ে করানো হয় না। ফলে সঠিক রোগ নির্ণয় না হওয়াতে চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হন।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ষাঠোর্ধ্ব শাহানারা বেগম। একমাত্র মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। দুই ছেলে দেশে থাকলেও ঢাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। রাজধানীর বদ্ধ জীবন ভালো না লাগায় বেশিরভাগ সময় গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। বেশ কিছুদিন ধরে বুকের ডান দিকে চিন চিন করে ব্যথা অনুভব করলে জানান প্রবাসী মেয়েকে। তার মেয়ে যোগাযোগ করেন দেশের পরিচিত এক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে রোগী দেখেন তিনি। বিস্তারিত শুনে বললেন মাকে পাঠিয়ে দিন। এরপর থেকেই শুরু হয় বিপত্তি।
প্রথম দেখাতেই শাহানারা বেগমের কার্ডিয়াক এমআরই করার পরামর্শ দেন তিনি। হাসপাতালের বিলিং কাউন্টার থেকে জানানো হয় পরীক্ষা ফি ২৭ হাজার ৩০০ টাকা। মায়ের অসুস্থতার কারণে চিন্তায় দিন পার করা ছেলে-মেয়ের কাছে তখন টাকার হিসাব করার সময় নেই। ওই এমআরইসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা মিলিয়ে ৪৮ হাজার ৩০০ টাকার শুধু পরীক্ষারই সুপারিশ করেন ওই চিকিৎসক। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এবার যখন চিকিৎসা দেয়ার পালা তখন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার ওষুধ হিসেব ৬ মাসের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন তিনি।
ছয়মাসে শুধু ওষুধ কিনতে হবে ৬০ হাজার টাকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধের খরচ মিলিয়ে যখন প্রায় লাখখানেক টাকা খরচ হয়ে গেছে ওই পরিবারের তখন বাঁধে আরেক বিপত্তি। অসুস্থ মায়ের অভিযোগ, যে এমআরই মেশিনে তার পরীক্ষার জন্য প্রবেশ করানো হয়েছিল সেই মেশিনটার ভেতর থেকে বের হওয়ার পর থেকে তার শরীর জুড়ে ব্যথা।
বয়োবৃদ্ধ ওই মহিলা জানান, কোনো চিকিৎসক তো দূরে থাক সামান্য একজন নার্সও ছিলেন না তাকে যন্ত্রের ভেতরে প্রবেশ করতে সাহায্য করার জন্য। এমন অবস্থায় কিছুটা ক্ষোভ আর অনিশ্চয়তা থেকেই পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় অসুস্থ শাহানারা বেগমের আর কোনো চিকিৎসা বাংলাদেশে করানো যাবে না। প্রতিবেশী দেশ ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শাহানারা বেগমকে।
যেখানে বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার টাকার শুধু পরীক্ষাই দিয়েছিলেন চিকিৎসক, সেখানে পুরো চিকিৎসায়ই ৪০ হাজারের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আর ৬ মাসের ওষুধ দেওয়া হয় মাত্র ১০ হাজার টাকার। সঙ্গে তাদের ব্যবহারে মানসিকভাবেও চাঙ্গা শাহানারা বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, এখানকার চিকিৎসকদের কথা শুনে তো আমি বাঁচার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। কান্নাকাটি করে প্রবাসী মেয়েকে দেশে এসে আমাকে শেষবারের মতো দেখে যেতে বলেছিলাম। বিদেশী চিকিৎসক সঠিক চিকিৎসার পাশাপাশি মনে যে সাহস তৈরি করে দিয়েছেন তাতে করে আরও অনেক দিন দিব্যি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারব।
প্রায় একই অভিজ্ঞতার কথা বলেন ৩২ বছর বয়সের ব্যাংককর্মী টুম্পা বিশ্বাস (ছদ্মনাম)। কিছুদিন আগেই গর্ভপাত হওয়া নওগাঁ শহরের বাসিন্দা টুম্পা পেটের ব্যথায় প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি জানান, টুম্পার কিডনিতে ইনফেকশন রয়েছে। তাই এ ব্যথা। এন্টিবায়োটিকসহ নানা রকম ওষুধ দিয়ে এক মাস পরে আসার কথা বলেন। টানা সাতদিন ওষুধ খেয়েও ব্যথা না কমায় আবার যায় ওই চিকিৎসকের কাছেই। এবার এন্টিবায়োটিকের পাওয়ার বাড়িয়ে দেয়া হয়। আর আশ্বস্ত করা হয় রাতের মধ্যে ব্যথা কমে যাবে।
কিন্তু আবারও এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও একফোঁটাও ব্যথা না কমায় স্বামীর সঙ্গে আসেন রাজধানীতে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান দেখাতে। প্রায় ২৫ হাজার টাকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওই চিকিৎসক জানান কিডনি নয় তার জন্মগত টিবি রয়েছে। আর তাই এ ব্যথা। তিনি পরামর্শ দেন একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞকে।
অগত্যা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের কাছে যান তিনি। সেই চিকিৎসক আরও ১৪ হাজার টাকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, টিবি নয় বরং তার লিভার অনেক বড় হয়ে গেছে। আর তাই এ ব্যথা। একজন লিভার বিশেষজ্ঞকে দেখানোর পরামর্শও দেন তিনি। অনেক খুঁজে রাজধানীর বড় একজন লিভার বিশেষজ্ঞের সিরিয়াল পান এক সপ্তাহ পর। রাজধানীতে থাকা-খাওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসকের ফি’বাবদ এরমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে প্রায় ১ লাখ টাকা। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা থাকে কপালে এই লিভার বিশেষজ্ঞকে দেখিয়েই ফিরে যাবেন সিলেটে।
কিন্তু একি বিপত্তি! লিভার বিশেষজ্ঞ এতদিনের পুরো চিকিৎসা পদ্ধতিকে ভুল বলে আখ্যায়িত করে আরও কয়েকটি পরীক্ষা শেষে জানালেন তার ওভারিতে কিছু জটিলতা রয়েছে। যার সমাধান দিতে পারে একমাত্র গাইনি চিকিৎসকই। অনেক হয়েছে! ধৈর্য্যরে পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে জমানো সব অর্থও এতদিনে শেষ। ফিরে গেলেন সিলেটে।
ব্যথা নিয়ে অফিস-সংসারও শুরু করেন। কিন্তু দিন দিন যখন ব্যথার তীব্রতা বাড়ে তখন সিদ্ধান্ত নেন ঋণ করে হলেও ভারতে যাবেন চিকিৎসা করাতে। পরিকল্পনা মোতাবেক ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে গেলে মাত্র কয়েকটি পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান, যে গর্ভপাত হয়েছিল তার ভ্রুণটা এখনো জরায়ুতে। আর তাই এ তীব্র ব্যথা। ছোট একটি অস্ত্রোপচার করেই ভ্রুণটা ফেলে দেয়া হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত দিব্যি সুস্থ আছেন জানিয়ে টুম্পা বলেন, ভারতে যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অস্ত্রোপচারসহ সব মিলিয়ে আমার খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা।
এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগী হাজারো মানুষের এমন ভুল চিকিৎসার নজির বাংলাদেশে অহরহ। এমনও হয় অস্ত্রোপচার শেষে গজ-কাঁচিও চিকিৎসকরা রেখে দেন রোগীর পেটে। এক কানের চিকিৎসা করাতে গেলে ডাক্তার আরেক কান দেখেও ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণেই না কি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ পরিকল্পনা মন্ত্রী নিজেই।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ‘অনেক ভালো ও নামকরা’ চিকিৎসক থাকার পরও প্রতিবছর এত মানুষ কেন চিকিৎসা নিতে বিদেশ যায় তার কারণ আমি বুঝি না। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদেশে যাওয়া আসার সময় বিমানে যত বাংলাদেশী যাত্রী দেখা যায়, তাদের বেশিরভাগই চিকিৎসার জন্য যাতায়াত করে। এর কারণ কি? কোথাও একটি গলদ নিশ্চয় আছে। হাজারে হাজারে আমাদের নাগরিকেরা চারপাশের দেশে যাচ্ছে। চেন্নাই, আগে নাম ছিল মাদ্রাজ। দৈনিক ফ্লাইট যায়, প্যাকড, ভর্তি প্যাসেঞ্জার্স। দুই দিকে।
যায়ও আমাদের লোক, আসেও আমাদের লোক। ব্যাঙ্ককেও তাই। যায়ও আমাদের লোক, আসেও আমাদের লোক। ব্যাঙ্গালোরেও। এদের বেশিরভাগ অন্তত: ৮০ শতাংশের বেশি, আমাদের যারা চিকিৎসার জন্য যায়। আমাদের এত ভালো ভালো, বিখ্যাত, সুপরিচিত, পণ্ডিত, গবেষক, চিকিৎসক আছেন; তাহলে কোথাও নিশ্চয় একটা ফাঁক আছে। তরুণরা পড়ালেখার জন্য বা অন্য প্রয়োজনে বিদেশে যাবে, কিন্তু দেশে ‘সবরকম চিকিৎসা সুবিধা থাকার পরও’ প্রতিদিন এত মানুষ কেন চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাবে সেই হিসাব মেলাতে পারছেন না তিনি।
তিনি বলেন, আমি যখন ঢাকার রাস্তায় বের হই, বিভিন্ন ধরনের ইনস্টিটিউট (চিকিৎসা কেন্দ্র) দেখি। এগুলো ৪০-৫০ বছর আগেও কিন্তু ছিল না। অথচ হাজারে হাজারে আমাদের নাগরিকেরা চারপাশের বিভিন্ন দেশে (চিকিৎসার জন্য) যাচ্ছে।
মন্ত্রীর কথারই সত্যতা যেন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালসহ রাজধানীর শেরেবাংলানগরে রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি সরকারি হাসপাতাল। এর বাইরেও রয়েছে হাজারো বেসরকারি হাসপাতাল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশজুড়ে মোট নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ১৩ হাজার ৬১১টি।
এ ছাড়া নবায়নের জন্য আবেদন করেছে আরও ২২ হাজার ৪৭২টি হাসপাতাল। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ এসব হাসপাতালের বেশিরভাগেরই নেই পর্যাপ্ত দক্ষ চিকিৎসক, উন্নতমানের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। এদের অনেক হাসপাতালেই করা হয় নানা রকমের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপাচারও। যার খেসারত দিতে হয় রোগীদের। এমনকি কাউকে কাউকে জীবন দিয়েও খেসারত দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব প্রাইভেট হসপিটালস এক গবেষণার ভিত্তিতে জানায়, দেশে গড়ে প্রতিবছর পাঁচ লাখ মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। আর এর কারণে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। এর বড় অংশই যায় ভারতে। গত বছর যেসব মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে দেশের বাইরে গেছে, তাদের শুধু চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি রোগীর ভ্রমণ, থাকা, খাওয়া ও আনুষঙ্গিক ব্যয় রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অদক্ষতা ও আস্থার সংকটে বিদেশে যাচ্ছে রোগীরা। ভারত ছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য।
‘কি রিজনস ফর মেডিক্যাল ট্রাভেল ফ্রম বাংলাদেশ টু ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক গবেষণার তথ্যে দেখা গেছে, ব্যবসায়ী, বেসরকারি চাকরিজীবী, ছাত্র-শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা বেশি যাচ্ছেন ভারতে। এই মানুষদের বেশিরভাগই বলেছে, ডাক্তার ও নার্সিংসেবা ভালো পায় বলে তারা সেখানে যায়। দেশে কেন চিকিৎসা করাচ্ছেন না এমন প্রশ্নে তারা বলেছেন, আস্থা কম পান। কারণগুলোর মধ্যে এর পরই আছে অপর্যাপ্ত হাসপাতাল, রোগীর নিরাপত্তা এবং সবার পরে খরচের বিষয়টি।
ভারতে মেডিক্যাল ট্যুরিজমের ৫৫ শতাংশই বাংলাদেশী। গত তিন বছরে মেডিক্যাল ট্যুরিজমে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। দেশটিতে মূলত হৃদরোগ, চোখের রোগ, ক্যান্সার, কিডনি, ফ্র্যাকচার, মেরুদণ্ড, পাকস্থলী ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নিতেই যায় বাংলাদেশের মানুষ। ভারতের কলকাতা, নয়াদিল্লি, ব্যাঙ্গালুর, চেন্নাই, হায়দরাবাদ ও মুম্বাই শহরে বেশি যাচ্ছে বাংলাদেশীরা।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এত আধুনিকায়নের পরও কেন দেশের রোগীরা বিদেশে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে এ কথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। করোনা মহামারির সময় আমাদের স্বাস্থ্যখাত যেভাবে কাজ করেছে তা পুরো বিশ্বে বিস্ময় তৈরি করেছে। কিন্তু এখনো আমাদের চিকিৎসকদের কাছে রোগীরা পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছেন না। ফলে আস্থার অভাবে লাখ লাখ রোগী দিগি¦দিক ছোটাছুটি করছে। যাদের সুযোগ আছে তারা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতে পড়ছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের জন্য শুধু হুমকিই নয়, লজ্জাজনকও।