ফাইল ছবি।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। ভোক্তা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৭৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত এক মাস ছিল ১ হাজার ৪৯৮ টাকা। তবে দাম কমা বা বাড়ার কোনো প্রভাব নেই বাজারে। পাইকারী থেকে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো আদায় করেন এলপিজির দাম। তাদের কাছে জিম্মি অবস্থায় বাধ্য হয়ে উচ্চমূল্যেই ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে জরুরি এ গ্যাসটি।
বৃহস্পতিবার বিইআরসি সচিব ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৮.৫৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহকৃত বেসরকারি এলপিজির ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ মূল্য প্রতি কেজি ১১৫ টাকা ৩১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সমন্বয়কৃত মূল্য ২ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রযোজ্য ও কার্যকর হবে এবং পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
এর আগে গত মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২৩২ টাকা থেকে ২৬৬ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন প্রতি মাসেই এলপি গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হয়।
নতুন সমন্বয়কৃত দামে এ মাসে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ১২ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমানোর পাশাপাশি সাড়ে ৫ কেজির সিলিন্ডার ৬৫২ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডার এক হাজার ৪৮২ টাকা, ১৫ কেজির সিলিন্ডার এক ৭৭৮ টাকা, ১৬ কেজির সিলিন্ডার এক হাজার ৮৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৮ কেজির সিলিন্ডার দুই হাজার ১৩৪ টাকা, ২০ কেজির সিলিন্ডার দুই হাজার ৩৭১ টাকা, ২২ কেজির সিলিন্ডার দুই হাজার ৬০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ২৫ কেজির সিলিন্ডার দুই হাজার ৯৬৪ টাকা, ৩০ কেজির সিলিন্ডার তিন হাজার ৫৫৭ টাকা, ৩৩ কেজির সিলিন্ডার তিন হাজার ৯১২ টাকা, ৩৫ কেজির সিলিন্ডার চার হাজার ১৫০ টাকা এবং ৪৫ কেজির সিলিন্ডার পাঁচ হাজার ৩৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর রেটিকুলেটেড এলপিজির দাম হবে প্রতি কেজি ১১৫ টাকা ৩১ পয়সা। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম নির্ধারিত হয়েছে ৬৬ টাকা ২২ পয়সা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্চে সৌদি আরামকো ঘোষিত প্রতি টন প্রোপেন ৭২০ ডলার ও বিউটেন ৭২০ ডলার হিসাবে ৩৫:৬৫ অনুপাতে মিশ্রণের মূল্য দাঁড়ায় ৭৩৩ ডলার। তাতে প্রতিকেজি এলপিজির খুচরা মূল্য দাঁড়ায় ১১৮ টাকা ৫৪ পয়সা। তবে সরকার এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দিলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এ দাম কোম্পানিগুলো মানে না বলে ভোক্তাদের অভিযোগ বরাবরের। তাদের অভিযোগ, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে নির্ধারিত মূল্যের চাইতে অনেক বেশি দাম দিতে হচ্ছে বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজি সিলিন্ডারে। একেকটা সিলিন্ডার প্রতি ৩শ থেকে ৫শ’ টাকা বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। আর এর জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন একে অপরকে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের মতে এক সিলিন্ডার এলপি গ্যাস কিনতেই ভোক্তাদের মাসে অন্তত: ২১৫ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে। সমন্বিতভাবে এই অর্থ লোপাটে নেতৃত্ব দিচ্ছে উৎপাদনকারী মিল, ডিলার এমনকি খুচরা বিক্রেতারা। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের।
স্বপ্না