ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকাই যৌক্তিক

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ১২ জানুয়ারি ২০২৩

এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকাই যৌক্তিক

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

ভোটার হওয়া ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে টেবিলে প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হয়।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ২০০৭ সালে একটি ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির জন্য সেনাবাহিনীর অধীনে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রমটি শুরু হয়। এটি ছিল সাময়িক পদক্ষেপ।
 
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমের ব্যাপ্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম শুধুমাত্র ভোটার বা ১৮ বছরের বেশি নাগরিকের জন্য নয়, বরং সব নাগরিকের জন্য প্রাসঙ্গিক। এছাড়া ব্যাংক হিসাব খোলা, চাকরির আবেদন, ইউটিলিটি সংযোগ, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীন বিভিন্ন ভাতার আবেদন, খাস জমিপ্রাপ্তির আবেদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে ভোটার হওয়ার বিষয় মাত্র একটি। অন্যান্য ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বিষয়ে ইসির কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমটি পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাহী বিভাগের অধীনে হয়ে থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার নিরিখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি নির্বাহী বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত এবং এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে দেশের অগ্রগতি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যেকোনও ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে কোনও ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িকতাবাদ, জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতে দৃঢ় অবস্থান ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।

তিনি বলেন, ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং-এর মাধ্যমে দেশ ও সরকার বিভিন্ন বিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করতে এনটিএমসি-তে ওপেন সোর্স ইনটেলিজেন্স টেকনোলজি (ওএসআইটি) এর মতো আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে এবং একটি ইনটিগ্রেটেড সিস্টেম লফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলআইএস) চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিস্তার রোধসহ মাদকাসক্ত ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের আইনের আওতায় আনাসহ চুরি, ছিনতাই প্রতিরোধ করে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নানান পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, চুরি, ছিনতাই ও মাদক পরিবহন বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত আছে।

ঢাকাসহ সারাদেশে মাদকের বিস্তার রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট কর্তৃক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে চুরি, ছিনতাই, মাদক ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জাতীয় সংসদে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
 

 

এমএস

×