ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও ভারতের বহুমুখী সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ ও ভারতের বহুমুখী সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে

সম্প্রীতি বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন বহুমুখী। এই সম্পর্কে ভাবাবেগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি  জড়িয়ে আছে। দিনে দিনে আমাদের দুই দেশের সোসাইটির বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী হচ্ছে। সেই কারণেই এখন বাংলাদেশ ও ভারত দুই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দুই দেশের মৈত্রী প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে রাখতে হবে।  প্রয়োজনে অপ্রোয়জনে আমাদের বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতেই হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা গ্যালারি মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে মিট দ্যা সোসাইটি অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এতে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।

প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। ডেপুটি স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসের আলোচনায় ইতিহাস নিয়েও আজ আলোচনা হয়েছে। আমরা শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছি। আসলে স্বাধীনতাযুদ্ধে আমরা একেকজন একেকভাবে অবতীর্ণ হয়েছিলাম। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছিলাম।

শামসুল আলম টুকু বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্বে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে, রাজনৈতিক দিক দিয়ে এ উপমহাদেশে টিকে থাকতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি সৃষ্টি করতে হবে। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। আর এটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। বিশ্ব শান্তির লক্ষ্যে, আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্নে, বাঙালি জাতির অস্তিত্বের প্রশ্নে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি এবং অর্থনীতির বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ শক্তি ছাড়া কিন্তু আমাদের কোনো পথ নেই।

শামসুল হক টুকু বলেন, ৬ ডিসেম্বর ইন্দিরা সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। আর তখন থেকেই পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর চূড়ান্ত আক্রমণ শুরু হয়। আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের চ্যালেঞ্জ আসবে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ-ভারতকে এগিয়ে যেতে হবে। 

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা বলেন, ৫১ বছর আগে ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভারত। সেটা ছিল বন্ধুত্বের শুভসূচনা। এখন আমাদের সম্পর্ক বহুমুখী। এই সম্পর্কে ভাবাবেগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। দিনে দিনে আমাদের দুই দেশের সোসাইটির বন্ধুত্ব শক্তিশালী হচ্ছে। আর সে কারণেই এখন বাংলাদেশ ও ভারত দুই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, যুদ্ধ ও বিপ্লবের স্মৃতি রক্ষা করা মুশকিল। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আমি এদেশে এলে ভারতের প্রতি মানুষের ভালোবাসা টের পাই। বেশির ভাগ মানুষ ভালোবাসা বহন করছে। তারা দুই দেশের বন্ধুত্বের স্মৃতি বহন করছে। আশা করি আগামীতেও একসাথে দুই দেশ এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত সরকারের পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশের মানুষকে সহযোগিতা করেছেন। ত্রিপুরায় জনসংখ্যার চেয়েও সেখানে বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল। ভারত আমাদের সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। 

লে কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, আমি দুই দেশের যোদ্ধাদের রক্ত দেখেছি। ভারতীয় সেনাদের রক্ত আমাদের মতোই। আমি সব সময় বলি, ভারতীয় সেনাদের রক্ত সব সময়ই পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা দিয়েই প্রবাহিত হবে। এটা আমাদের জমিকে উর্বর করবে, আমাদের বন্ধুত্বকে চিরস্থায়ী করবে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে ৭১ এর চেতনাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক হারুন রশীদ, মুসা সাদিক, অধ্যাপক কামরুল আহসান খান, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভারত।

 

অপূর্ব কুমার

×