ধর্ষণ
দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৮৩০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া একই সময়ে নারীদের ওপর পারিবারিক নির্যাতন হয়েছে ৪১১টি, পারিবারিক নির্যাতনে হত্যা হয়েছে ২৫৩টি, পারিবারিক নির্যাতনের ফলে আত্মহত্যা হয়েছে ৭৯টি ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৪৮টি।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) 'নিঃশঙ্ক জীবন চাই: নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজের অঙ্গীকার চাই' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ‘নারী নিরাপত্তা জোট’ ও ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। দেশের প্রথম সারির ৯টি পত্রিকার সংবাদ বিশ্লেষণ করে নারীদের উপর নির্যাতনের এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটে’র প্রধান নির্বাহী জিনাত আরা হক বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। এ অর্জনে নারীদের একটি বড় অবদান রয়েছে। তারপরও নারীরা ঘরে-বাইরে, সব সম্পর্কে, সব বয়স-শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও পরিস্থিতি বিশ্লেষণে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বরং ভয়াবহতা ও নৃশংসতা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে।’
সুষ্ঠ তদন্তের অভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে সংঘটিত নারী নির্যাতন মামলাগুলো তদন্তেই বিনষ্ট হয়ে যায়। অধিকাংশ নারী নির্যাতনের মামলার তদন্তে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা প্রভাবশালীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের মানুষের সঙ্গে কথা না বলে নিজের মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন। এতে অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। আবার অনেক অপরাধী জামিনে বের হয়ে কৌশলে বিচার এড়িয়ে যায়।’
এসময় নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ৯টি দাবি তুলে ধরেন নারী নেত্রীরা। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মহুয়া লিয়া ফলিয়া, হিউম্যান রাইট্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেটজ বাংলাদেশের ম্যানেজার প্রোগ্রাম আফসানা বিনতে আমিন, আমরাই পারি জোটের সদস্য সেলিনা আহমেদ, নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা, আইনজীবী বশীর আহমেদ চৌধুরী, আইনজীবী হামিদা বেগম ও নির্যাতনে শিকার হয়ে মারা যাওয়া মারুফার মা আকলিমা খাতুন।
এমএইচ