ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি শনাক্ত

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২১ নভেম্বর ২০২২

জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি শনাক্ত

সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, গতকাল রবিবার আদালত থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তির নাম আমরা পেয়েছি। তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও কারা কারা ছিল এরকম বেশ কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। কিন্তু এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে ব্যক্তির নাম পরিচয় আমরা বলতে চাচ্ছি না।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা কীভাবে হয়েছে সেটাও আমরা গোয়েন্দার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। পরিকল্পনা ও অপারেশনে কারা কারা ছিল এরই মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। তাদের যতদ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা আমাদের মূল লক্ষ্য।

জঙ্গিদের টার্গেট শুধু চারজনই ছিল নাকি আরও জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার টার্গেট ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, চারজনকে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তবে দুজনকে তারা নিয়ে যায়। প্রথমে চারজন নেমেছে, তাদেরই তারা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। যদি একসঙ্গে বেশি নামতো তাদেরও নিয়ে যেতো হয়তোবা, এমন পরিকল্পনা থাকতে পারে। অপারেশনে যারা ছিল তাদের গ্রেফতার করলে পুরো পরিকল্পনা জানা যাবে। তাদের আরও বড় পরিকল্পনা থাকলেও থাকতে পারতো বলে জানান তিনি।

সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, আদালতে হাজিরা দিতে আসেন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গিরা। প্রত্যেক আসামিই জঙ্গি সংগঠনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সব সদস্যকে সিটিটিসি ২০১৬ সালে গ্রেফতার করেছিল। গ্রেফতারের মাধ্যমে তাদের বেশকিছু অপারেশন ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত ও উদঘাটিত হয়েছিল। তাদের পুনরায় গ্রেফতার করা আমাদের কাছে একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে রেড অ্যালার্ট বলতে কোনো শব্দ পুলিশি ভাষায় আছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা প্রত্যেকটা পয়েন্টকে সতর্ক করে দিয়েছি। যেন করে পলাতক জঙ্গিরা পালিয়ে যেতে অথবা কোনোভাবে দেশত্যাগ করতে না পারে, সব ব্যবস্থা পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আইজিপি ঘোষণা দিয়েছেন তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব সদস্যকে সতর্ক করা হয়েছে। যেন কোনোভাবেই পলাতক জঙ্গিরা নিরাপত্তার ফাঁকে পালিয়ে যেতে না পারে।

সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়াকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, অপারেশনের নেতৃত্ব জিয়া দেননি। যে অপারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছে তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। তবে তার নামটি এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাচ্ছি না।

জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নতুন জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা আছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম, জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনটি তৈরি হয়েছে। আনসার আল ইসলামেরও নতুন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগসূত্র পেয়েছি। তবে গতকালের জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার অপারেশনে নতুন জঙ্গি সংগঠনের কোনো হাত নেই।

এর আগে রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এসময় আসামি আরাফাত ও সবুরকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে জঙ্গিরা। পরে ঘটনাস্থল আরাফাত ও সবুরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় কোর্ট পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞানামা আসামি করা হয় আরও ৭-৮ জনকে।

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×