ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১

নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে জনকণ্ঠ কখনো আপোষ করেনি

প্রকাশিত: ১৯:০২, ২৭ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ১৯:০৮, ২৭ অক্টোবর ২০২২

নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে জনকণ্ঠ কখনো আপোষ করেনি

গ্লোব জনকন্ঠ শিল্প পরিবারের চেয়ারম্যান শামীমা এ খান

‘জনকণ্ঠ কখনো নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে আপোষ করেনি’ উল্লেখ করে জনকণ্ঠের সম্পাদক এবং গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চেয়ারম্যান শামীমা এ খান বলেছেন, পত্রিকার একটি নীতি, আদর্শ এবং লক্ষ্য রয়েছে। জনকণ্ঠ কখনো এই নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে আপোষ করেনি। 

অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। আমরা আমাদের নীতিতে অটল থেকে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যান সাধন করতে চাই। অতীতে অনেক প্রতিরোধ, অত্যাচার-নির্যাতন এবং অর্থনৈতিক অবরোধের মধ্যে জনকণ্ঠ নীতিবিচ্যুত হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবনে জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ভাইস চেয়ারম্যান জিশাল এ খান। অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে আগত জেলা প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সম্মেলনে শামীমা এ খান বলেন, ‘জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ মৃত্যুবরণ করার পর একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে আমাকে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। সকলের সহযোগীতায় আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে নিতে।’ 

তিনি বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যে কোন ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে প্রচার হয়ে যায়। দেশের অসংখ্য টেলিভিশনের পর্দায় এইসব সংবাদ দেখানো হয়। এক্ষেত্রে আমাদের প্রিন্ট মিডিয়ার দায়িত্ব হবে ঘটনার পিছনের সংবাদ খুঁজে বের করা। অনুসন্ধান করে আসল খবর বের করা। তবেই টেলিভিশনের তাৎক্ষনিক সংবাদ থেকে আমরা ব্যতিক্রম হতে পারবো। মানুষ আমাদের পত্রিকা আরও বেশী পড়বে।

অনুসন্ধান করে খবরের পিছনের খবর বের করা জনকণ্ঠের ঐতিহ্য উল্লেখ সম্পাদক শামীমা এ খান আরও বলেন, ‘জনকণ্ঠ দ্রুত জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে এটিও ছিলো অন্যতম কারন। মনে রাখতে হবে, কোন সংবাদই ছোট নয়। অনুসন্ধান করে পিছনের সংবাদ পরিবেশন করা হলেই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। তাই অনুসন্ধান সাংবাদিকতার দিকে বিশেষ নজর দেয়ার আহবান জানান তিনি। এ সময় কাজের উৎসাহিত করার জন্য জেলা প্রতিনিধিদের জন্য বছরে ‘বেষ্ট রিপোর্ট পুরস্কার’ দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

প্রথম অধিবেশনে জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জনকণ্ঠ সব সময় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। দুর্নীতিবাজদের পক্ষে কখনই ছিল না এবং থাকবেও না। সেটা আওয়ামী লীগ হোক বা অন্য যে কোন দলের হোক না কেন?’

উপদেষ্টা সম্পাদক প্রতিনিধি সম্মেলনে বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম জনকণ্ঠ আজ এখানে পোঁছেছে। করোনার মধ্যে একটি অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিলো। অভ্যন্তরীন সমস্যাও ছিলো। এ সব কারনে আমাদের বড় ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আমাদের পূর্বের অবস্থা ফিরে যেতে চাই। এজন্য জেলা প্রতিনিধি সহযোগিতা চান তিনি।

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে সংবাদ পরিবেশন মাধ্যম আরও সহজ হয়েছে। অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমে যা মানুষ সহজে পেয়ে যাচ্ছে। তাই কোন ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে তা অনলাইনে পাঠিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে জেলা-উপজেলার মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।’

জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ওবায়দুল কবির বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কোন ঘটনা ঘটলেই ভাইরাল হয়ে যায়। আমাদের ঘটনার পেছনের ঘটনা উল্লেখ করে নিউজ করতে হবে। যা পত্রিকাকে গণমুখী ও পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলবে। সারা দেশের ৬৪ জেলা ও পাঁচশত উপজেলা- সব প্রতিনিধিকে এক যুগে কাজ করতে পারলে পত্রিকার মান উন্নত হবে।

যুগ্ম-সম্পাদক মোয়াজ্জেমুল হক বলেন, ত্রিশ বছরে জনকণ্ঠ অনেক বাধা পেরিয়ে এই অবস্থায় এসেছে। স্বাধীনতা বিরোধিতারা বারবার হামলা করেছে। সুযোগ পেলেই মামলা দিয়েছে।

বার্তা সম্পাদক এম এ হামিদুজ্জামান বলেছেন, জনকণ্ঠ এক সময় ঘরে ঘরে ছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা সবাই আন্তরিক হলে ঘরে ঘরে না থাকলেও পাড়ায় পাড়ায় থাকবে জনকণ্ঠ। তাই সংবাদকে আরও সহজ ভাষায় সহজভাবে উপস্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি।

জেলা প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে চীফ রিপোর্টার কাওসার রহমান বলেন, মফস্বলের অনেক ঘটনা জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করে। বড় কোন ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গেই অফিসকে জানাতে হবে।

পঞ্চগড়ের স্টাফ রিপোর্টার এ আর মুকুল বলেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্রকে আধুনিকতার জগতে নিয়ে গেছেন জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ।  এ আধুনিকতাকে ধরে রাখার জন্য পত্রিকার পলিসি নিয়ে ভাবতে হবে।

বগুড়ার স্টাফ রিপোর্টার সমুদ্র হক বলেন, জনকণ্ঠ আজ ত্রিশ বছর অতিক্রম করেছে। এ ত্রিশ বছরে পাঠকও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে মেধার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির  সমন্বয় ঘটেছে। তাই এখন সংবাদ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আরও কৌশলী হতে হবে। পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় করে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।

বার্তা সম্পাদক এম এ হামিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিনাত জেরিন আলতাফ, সিনিয়র র্নিবাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মজিবুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক মোয়াজ্জেমুল হক, চীফ রিপোর্টার কাওসার রহমান ও মফস্বল সম্পাদক শামসুল আলম সেতু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্বাহী সম্পাদক ওবায়দুল কবির।

 
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×