
ইয়াবা কারবারী এরশাদুল হক
কক্সবাজারের উখিয়ার ইয়াবা কারবারের গডফাদার এরশাদুল হক (৩২) মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে কৌশলে ডিলারদের সঙ্গে লেনদেন করতেন। ট্রাকে মাছের চালানের সঙ্গে আবার বাসে করে ঢাকায় পাঠাতেন ইয়াবা। আবার প্লেনে উড়ে এসে ঢাকায় নিজেই রিসিভ করতেন পাঠানো ইয়াবা।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ডিএনসি ঢাকা মেট্রো (উত্তর) উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান।
এরশাদুল হক কক্সবাজার সদরের নুরুল হকের ছেলে। পৈত্রিক সূত্রে রয়েছে মাছের ব্যবসা। আর এর আড়ালেই ইয়াবার ব্যবসা করতেন তিনি। ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগে করতেন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার। এরশাদুল হক একটি সরকারি কলেজ থেকে বিবিএ করেছেন। তিনি নিজেকে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন বলে দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাশেদুজ্জামান বলেন, আমরা প্রায় এক মাস আগে এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানতে পেরে তার সঙ্গে সখ্যতা তৈরির জন্য আমরা সোর্স নিয়োগ করি। গত ২৪ অক্টোবর রমনা সার্কেলের পরিদর্শক তমিজ উদ্দিন মৃধা ক্রেতা সেজে দুই হাজার পিস ইয়াবা কেনার দেন-দরবার করার সময় এ চক্রের সহযোগী সদস্য হুমায়নকে তার স্ত্রীসহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। হুমায়ন ও তার স্ত্রীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হুময়ুন জানায়- উখিয়া ও টেকনাফ এলাকার ইয়াবার মূল গডফাদার এরশাদুল। তিনি ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে দুই একদিনের মধ্যে ঢাকায় অবস্থান করবে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে এরশাদুলকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
রাশেদুজ্জামান বলেন, এরশাদুল সরাসরি মিয়ানমারের ইয়াবার ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।
নৌপথে অবৈধভাবে মিয়ানমারে যাতায়াত করা রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তায় ইয়াবার চালান আনতেন টেকনাফে। এরপর তা তিনি নির্ভরযোগ্য সোর্স ও বাহকের মাধমে ঢাকায় পাঠাতেন কখনো বাসে কখনো ট্রাকে। তিনি নিজে কখনো ইয়াবা বহন করতেন না। ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠিয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকতে নিজে ঢাকায় যাতায়াত করতেন প্লেনে। ঢাকা ও মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতেন।
ইয়াবার দামের বিষয়ে তিনি বলেন, এরশাদুল মিয়ানমার থেকে পিস প্রতি ৮০ টাকায় কিনে ঢাকায় বিক্রি করতেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।
এমএইচ