বিশ্ব ইজতেমা
করোনার কারণে দুই বছর অনুষ্ঠিত না হওয়া তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা আগামী জানুয়ারী মাসের ৬,৭ ও ৮ এবং ৪ দিন বিরতি দিয়ে ১৩,১৪ ও ১৫ জানুয়ারী দুপর্বে অনুষ্ঠানের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে ব্যাপক প্রস্তুতির পরিকল্পনা নিয়েছেন তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিরা।
ঢাকা থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে টঙ্গী তুরাগ নদীর তীরে টঙ্গীর বিশাল ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা ১৯৬৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দুপর্বে বিশ্ব ইজতেমা করা হলে টঙ্গী গাজীপুর ও এর আশপাশ এলাকায় দু’সপ্তাহব্যাপী দেখা দেয় অচলাবস্থা। থমকে যায় জনজীবন। লাখো মানুষের চরম দুর্ভোগ লাগবে একপর্বে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসী এবং সাধারণ মুসল্লীরা।
ইজতেমার আয়োজন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আগামী বৃহস্পতিবার আন্তমন্ত্রণালয় সভার আহ্বান করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাবলিগ জামাতের মুরুব্বি, গাজীপুর মহানগর পুলিশ ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা মহামারি করোনার কারণে গেল দুই বছর বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্বের ৫০/৬০ দেশের মুসলমানরা ইজতেমায় অংশ নিয়ে থাকেন।
তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা জনকণ্ঠকে জানান, ২০২২ সালের বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের জন্য অনেক দিন থেকেই সরকারের সঙ্গে কথা বার্তা চলছিল।
এর আগে ভারতের প্রখ্যাত মাওলানা ও তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সাদের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়ে ইজতেমা মাঠে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় অনেক মুসল্লী হতাহত হন। বর্তমানে ইজতেমা আয়োজনে দুটি গ্রুপ হওয়ায় আলাদাভাবে দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা, অপরটির নেতৃত্বে বাংলাদেশের আলেমওলেমাদের মাওলানা যোবায়ের অনুসারী গ্রুপ।
গতকাল মঙ্গলবার মাওলানা সাদ অনুসারী মাওলানা হারুন অর রশিদ জনকণ্ঠকে বলেন, করোনার কারণে দুই বছর ইজতেমা আয়োজন করা যায়নি। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তাই আগামী বছরের জানুয়ারী মাসের ৬, ৭, ৮ প্রথম পর্ব এবং ১৩, ১৪, ১৫ জানুয়ারী দ্বিতীয় পর্ব আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এখানে মূল সমস্যা কারা প্রথম পর্বে এবং কারা দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা আয়োজন করবে এনিয়ে আলোচনা।
মাওলানা যোবায়ের অনুসারীদের মধ্যে মাওলানা মেজবাহ উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, কাকরাইলে ইজতেমা আয়োজন নিয়ে নিজেদের মধ্যে মাসোহারা হচ্ছে। প্রতি বছর আমাদের জোর হয়। অনেক আগেই ইজতেমার জন্য জানুয়ারির ৬, ৭, ৮ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৩, ১৪, ১৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, ইজতেমার প্রস্তুতি বিষয়ক একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওখানেই বিশ্ব ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
ইজতেমা অনুষ্ঠানের ব্যাপার নিয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সব কিছু জানা যাবে।
এমএইচ