ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

নৌপরিবহনের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে : আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯:১১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৯:১৩, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

নৌপরিবহনের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে : আইনমন্ত্রী

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক নৌ দিবস-২০২২ উদযাপন

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জনসংখ্যা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের নৌ পরিবহনের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে এবং ভবিষ্যতেও এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। 

তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য, শক্তি এবং পানির চাহিদা বাড়ছে, যা নৌ পরিবহন, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং সুনীল অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তা আরো বাড়িয়ে তুলবে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক নৌ দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। নৌবাণিজ্য খাতের বিশিষ্ট পেশাজীবী ও অংশিজনদের নিয়ে নৌপরিবহন অধিদফতর এ সেমিনারের আয়োজন করে।
 
আনিসুল হক বলেন, পণ্য পরিবহনের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি হল শিপিং। কেননা শিপিং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর করে। দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। ফলে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ নৌপথে পরিবহন করা হয়।

‘‘নিউ টেকনোলজিস ফর গ্রিনার শিপিং’’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত সেমিনারে আইনমন্ত্রী বলেন, এবারের প্রতিপাদ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি টেকসই পরিবেশবান্ধব নৌ-বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিপাদ্যটিতে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে এসডিজি ১৩ ও ১৪ তথা জলবায়ু, মহাসাগর, সমুদ্র এবং সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার, এসডিজি ৯ তথা শিল্প, উদ্ভাবন এবং অবকাঠামো উন্নয়ন এবং এসডিজি ১৭ তথা লক্ষ্য অর্জনে অংশীদারিত্ব এবং বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
 
নতুন ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে মি. হক বলেন, যত দ্রুততার সাথে আমরা সঠিকভাবে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারব, আমাদের মেরিটাইম সেক্টর তত ভাল আর্থ-সামাজিকভাবে টেকসই হবে এবং আমাদের এসডিজির লক্ষ্যগুলি অর্জন এবং এর দ্বারা আমাদের জনগণ উপকৃত হবে। 

অন্যথায় আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগীতায় অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়ব। আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্য ও জাহাজ চলাচল সংক্রান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন-কানুনসমূহ পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে নির্গত কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব। আমাদেরকে সকল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, যোগ করেন আইনমন্ত্রী।
 
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ প্রতিটি সেক্টরে অসামান্য উন্নয়ন করেছে। মেরিটাইম সেক্টরও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে রফতানি ও আমদানিও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি জাতীয় প্রবৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণ। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলায়, বহু বিলিয়ন ডলার মূল্যের একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে নতুন জেটি এবং টার্মিনাল নির্মাণ, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ইত্যাদি। 

বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণের সম্ভাবনার কারনে বাংলাদেশকে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সাথে তুলনা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের রাষ্ট্রপরিচালনার পলিসিতে  নাবিকদের এবং মেরিটাইম সম্পর্কিত অন্যান্য ক্ষেত্রের কর্মীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অগ্রাধিকার পেয়েছে।  ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির বাংলদেশি গ্র্যাজুয়েটরা মেরিটাইম শিল্পের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে মেরিটাইম শিক্ষায় অবদান রাখছেন। যোগ্য অনুষদ ও কর্মীদের মাধ্যমে উচ্চতর মেরিটাইম শিক্ষার জন্য বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যা প্রযুক্তি এবং পরিবেশবান্ধব শিপিং এর গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে ।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বুয়েটের অধ্যাপক মীর তারেক আলী, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হক, ব্যুরো ভেরিটাস (বাংলাদেশ) এর কান্ট্রি ম্যানেজার মো. হারুনুর রশিদ প্রমুখ বক্তৃতা প্রদান করেন। 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পেট্রোলিয়াম এন্ড মিনারেল রিসোর্স ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তামিম। সেমিনারে বিষয় ভিত্তিক কারিগরি প্রবন্ধ উপস্থাপনার পাশাপাশি মেরিটাইমের পাঁটি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য মেরিটাইম অংশিজনদের মধ্য থেকে এবছরের সেরা পাঁচ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×