ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

‘বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে’ পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৬ আগস্ট ২০২২

‘বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে’ পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ

নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পূর্ব নুরুজ্জামান

জাতীয় শোক দিবসে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে চলন্ত প্রাইভেটকারের দরজা খুলে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন কাঁচপুরের নুরুজ্জামান (৩৮) নামের এক ব্যক্তি।

 সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নদীতে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

নুরুজ্জামানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকায়। ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে আয়রনম্যান পদে চাকরি করেন তিনি।

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন,রবিবার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। সোমবার ভোরে ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কিন্তু ফুল দেওয়ার জন্য অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতু দিয়ে ফেরার পথে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে ঝাঁপ দেন তিনি।

তিনি আরও জানান, ঝাঁপ দেওয়ার আগে তিনি মোবাইলে ভিডিও করেছিলেন। সেখানে তিনি বলছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান সবার। আমরা কেন ফুল দিতে পারব না?

গাড়িতে নুরুজ্জামানের পাশে থাকা ওমর ফারুক বলেন, সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছাই সকাল সাড়ে ১০টায়। এরপর সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করে চেষ্টা করি ফুল দিতে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো কার্ড না থাকায় আমরা ফুল দিতে পারিনি। এরপর সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা করি।

তিনি বলেন, সেতুতে অবস্থানকালে গাড়িটি কম গতিতে চলছিল। কারণ সেখানে সেতু কর্তৃপক্ষ ডিভাইডার দিয়ে রেখেছিল। তখন নুরুজ্জামান গাড়ি থামাতে বললেও আমরা তার কথা শুনিনি। এরপর তিনি কিছু না বলেই দরজা খুলে সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানালে নৌ-পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলে। 

ওমর ফারুক আরও বলেন, ঝাঁপ দেওয়ার আগে সেতুতে অবস্থানকালে নুরুজ্জামান মোবাইলে নিজের ভিডিও চালু করে কথা বলছিলেন। তিনি শেখ মুজিবকে ভালোবাসেন, ফুল দিতে পারেননি তাই কষ্ট পেয়েছেন— এসব বলছিলেন।

তিনি বলেন, আমার সঙ্গে নুরুজ্জামানের প্রায় চার বছরের সম্পর্ক। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। তবে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে অনেক ভালোবাসতেন। কাঁচপুর এলাকায় তিনি দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ওমর ফারুক জানান, তারা ১৩ হাজার টাকায় প্রাইভেটকারটি ভাড়া করেছিলেন।  তারপর টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঢাকার শাহবাগ থেকে ফুলের তোড়া কিনেছিলেন।

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, এক লোক পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। আমরা এখনও তাকে পাইনি।


 

টিএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×