মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ঈদযাত্রায় ভোগান্তি
ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাস ও নৌপথে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
ঈদযাত্রায় বাসে নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ, তিন গুণ এমনকি এর চেয়ে বেশি আদায়ের মধ্যে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, দূরপাল্লায় ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-রাজশাহী, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি রুটে বিদ্যমান ভাড়া থেকে গন্তব্য ভেদে ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি- প্রতিটি রুটে এই ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এই চিত্র অব্যাহত আছে।
‘পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে। এ ছাড়া খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের বাসগুলো বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী বহন করলেও কোনো কোনো পথে যাত্রীসাধারণকে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশি দূরত্বের টিকিট কিনতে বাধ্য করছে।’
এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, দিনমজুর এ ধরনের স্বল্প আয়ের মানুষ পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে যাত্রীকল্যাণ সমিতি। তারা বলছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশালের বিভিন্ন নৌপথের ভাড়া কমানো হলেও এখন এই পথেও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে ঠেকেছে।
রেলে টিকিট কালোবাজারি, অনলাইনে টিকিট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে যাত্রীসাধারণের হাতে টিকিট পৌঁছাতে নির্ধারিত মূল্যের তিন গুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলেও জানতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি। বলছে, দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশপথেও এই ভাড়া নৈরাজ্য চলছে।
গত ঈদে ভোগান্তি না থাকলেও এবার বাসের টিকিটের জন্য হাপিত্যেস, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায়ের পাশাপাশি রাজধানী থেকে বের হতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
উত্তরের পথে গাজীপুর, সাভারের দিকের পাশাপাশি দক্ষিণে এই মুহূর্তে প্রধান পথ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে উঠতেই তীব্র ভোগান্তি হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের নারায়ণগঞ্জ অংশ পাড়ি দিতেই কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ঈদযাত্রায় এই ভোগান্তির এক কারণ। চলতি বছর ঈদুল ফিতরে আনুমানিক ২০ লাখের মতো মানুষ মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরেছেন। এবার সে সুযোগ না থাকায় সড়কের পাশাপাশি ট্রেনেও উপচে পড়া যাত্রী দেখা গেছে।
যাত্রীকল্যাণ সমিতি বলছে, ঈদযাত্রার পাশাপাশি নগর পরিবহনেও একই দশা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সিটি সার্ভিসের বাসের ভাড়া কোনো কোনো পথে ৫ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে।
উত্তরা থেকে সায়েদাবাদে ৫০ টাকার বাস ভাড়া ৩০০ টাকা, শ্যামলী থেকে গুলিস্তানে ৩০ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা, ধানমন্ডি থেকে সদরঘাট ২৫ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করার কথাও জেনেছে তারা।
বাসের পাশাপাশি রিকশা ও অটোরিকশার ভাড়াও তিন থেকে চার গুণ আদায় করা হচ্ছে।