ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

নাগরিক সম্মেলনে তাজুল

জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা উচিত

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ১২ মার্চ ২০২১

জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা উচিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইউনিয়ন পরিষদ সুষ্ঠু কাজ করলে বাংলাদেশের চেহারা বদলে যাবে। তাই জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। একইসঙ্গে দেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে শুধু সরকার নয় দেশের সকল নাগরিক এবং সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত গণতান্ত্রিক সুশাসনের জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক শাসন ও স্থানীয় উন্নয়ন তৃণমূল প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা শীর্ষক নাগরিক সম্মেলন-২০২১ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ। সম্মেলনের সহযোগিতায় ছিল এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ফেলো এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল আঞ্চলিক পরিচালক এশিয়ার লিলিয়ান মারকাদো বক্তব্য রাখেন। সারাদেশ থেকে আগত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা নাগরিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজি মোঃ আবদুর রহমান। উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক এবং সিপিডি ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। এ সম্মেলনে দেশের ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন অঞ্চল থেকে তিন শতাধিক স্থানীয় পর্যায়ের নাগরিক সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার, বেসরকারী খাতের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে নিতে হলে সাধারণ মানুষসহ ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ এবং নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই শেখ হাসিনার সরকারের মূল উদ্দেশ্য। তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের সময় মাথাপিছু ছিল ৮৪ ডলার। বঙ্গবন্ধু মাত্র তিন বছরে মাথাপিছু আয় ৮৪ ডলার থেকে ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন। তিনি বলেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর দীর্ঘ ২১ বছর অর্থাৎ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় আসীন ছিলেন তারা দেশের মাথাপিছু আয ৩২৯ ডলারে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকায় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার কারণে মাথাপিছু আয় এখন ২১ শত ডলারে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সরকার বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হলে মাথাপিছু আয় দরকার হবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার। শেখ হাসিনার সরকার সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। স্থাানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মধ্যে এখন একটি সম্ভাবনাময দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক সূচকসহ অন্যান্য সূচকে এই অঞ্চলে উদীয়মান রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা প্রণীত পথনক্সা অনুযায়ী উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। মন্ত্রী বলেন, আমাদের বহু দূর যেতে হবে, আমরা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। শুধু সরকার একা নয়, জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদকে আরও পারফর্ম দেখাতে হবে। যদি সঠিক পারফর্ম করে, সঠিক ডেলিভারি দেয় তাহলে পাল্টে যাবে বাংলাদেশ। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বাররা তাদের সঠিক ডেলিভারি দিচ্ছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয় সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। ১০০ বছরের খাদ্য ঘাটতি থেকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। শতভাগ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুত দিয়েছি।
×