ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

বগুড়ায় মোটর মালিকদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১০

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বগুড়ায় মোটর মালিকদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১০

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বগুড়া বাসটার্মিনাল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ভাংচুর হয়েছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ ঘটানায় আহত পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্য কনস্টেবল রমজান আলী(৫৫) ও টিভি কামেরাপার্সন রাজু আহম্মেদ (৪০)সহ কয়েকজন বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। ৪-৫টি বাস ও বেশকিছু মোটরসাইকেলসহ একটি ফিলিং স্টেশন ভাংচুর হয়। এছাড়া মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুলিশ ও বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ সূত্র জানায়, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরিবহন ব্যবসায়ীদের দু’টি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই দুটি গ্রুপের সঙ্গে জড়িতরা ক্ষমতাসীনদলের নেতাকর্মী। একটিতে রয়েছেন সদর যুবলীগের আমিনুল ইসলাম এবং অপর গ্রুপে রয়েছেন মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন। দু’গ্রুপের বিরোধ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আদালতে গড়ায়। এর প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে(এডিএম) প্রশাসক নিয়োগ দেন। অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গতমাসে নির্বাচনী তফসিলও ঘোষণা করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, মোটর মালিক গ্রুপের নেতা সদর থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটর মালিক গ্রুপের কার্যালয় ও মালামাল তার হেফাজতে শহরের চারমাথা কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় রাখেন। প্রতিপক্ষ গ্রুপের অভিযোগ, বাস টার্মিনাল এলাকায় বাস থেকে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এদিকে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম গ্রুপের লোকজন মঙ্গলবার চারমাথা এলাকায় অবস্থান নেয়ার জন্য যান। অপরদিকে চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকায় মোটরমালিক গ্রুপের নতুন অফিস স্থাপনকারী আমিনুল ও তার লোকজন সেখানে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। এ সময় আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে। মোহন গ্রুপের কয়েক শ’ লোকজন বাস টার্মিনাল এলাকায় গেলে আমিনুল গ্রুপের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে শুরু হয় ভাংচুর। অফিস ও মোটরসাইকেল ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। প্রায় আধাঘণ্টা দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এ সময় ছবি তুলতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপার্সন রাজু আহম্মেদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এছাড়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে পুলিশ শর্টগানের গুলি ছুড়ে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে। পুলিশের ওপর ইটপাটকেলও নিক্ষেপ হয়। এ সময় পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে চারমাথা এলাকার গ্রুপটি একটি পেট্রোল পাম্পে হামলা ও শাহ ফতেহ আলী ব্যানারের কয়েকটি বাস ভাংচুর করে। সংঘর্ষের পর চারমাথা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানার ওসি জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে ২২ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়। এছাড়া মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
×