জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ নতুন করে জনবল নিয়োগ, অবৈধ প্রবাসী কর্মীদের বৈধ করা ও ফেরানোর প্রক্রিয়া ঠিক করে মালদ্বীপের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার। মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লা শহিদের ঢাকা সফরের মধ্যে মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই চুক্তি সই হয়। একই সময়ে বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির সঙ্গে মালদ্বীপের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরেকটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
চুক্তি সই হওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সফররত মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শহিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই সমঝোতা চুক্তি সইসহ বৈঠকের নানাদিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মালদ্বীপের মন্ত্রী শহিদ বলেন, “একটি সমঝোতা স্মারক হবে দুই দেশের মধ্যে জনবল আদান-প্রদানে এবং বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়োগে শক্ত কাঠামো ঠিক করতে।” বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশী কর্মীদের মালদ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং মৌলিক অধিকার ও জীবনমান রক্ষায় অবৈধকর্মীদেও বৈধকরণের প্রয়োজনীয়তার বিষয় আমি উল্লেখ করেছি। আমি এই বৈধকরণের প্রক্রিয়া এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনে অবিরাম সহায়তার জন্য মন্ত্রী মোমেন ও বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির দেশ মালদ্বীপে বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে মোট কতজন বাংলাদেশী কর্মী কাজ করছেন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ৮০ হাজারের মতো প্রবাসীকর্মী দেশটিতে রয়েছে বলে সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল নাজমুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে এক লাখ ১০ হাজার ৮৪ জন বাংলাদেশী কর্মী মালদ্বীপে ছিল। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সেখান থেকে প্রায় ১৫ হাজার কর্মী দেশে ফিরেছেন বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “মালদ্বীপ আমাদের কিছু নার্স নেবে। ইতোমধ্যে অনেক ডাক্তার ওখানে কাজ করেছেন, বিশেষ করে ভ্যাকসিনেশনের জন্য।”
মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শহিদ বলেন, “স্বাস্থ্য, ওষুধ, প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। আমাদের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি পছন্দের গন্তব্য বাংলাদেশ।” রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সহযোগিতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পারস্পরিক উদ্বেগের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি পুনর্ব্যক্ত করেছি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তার বিষয়ে। মালদ্বীপ সবসময় রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কথা বলেছে। গাম্বিয়া সরকারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা নিয়ে জবাবদিহিতা আমরা চাই।” বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের আয়োজনে মার্চে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “আমাদের সৌভাগ্যের বিষয় প্রতিবেশী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ঢাকায় আসবেন; উনি ঢাকায় আসবেন আমাদের স্বাধীনতা দিবস এবং মুজিববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে।”