স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে এখন পর্যন্ত কারও দেহে নোবেল করোনার ভাইরাস মেলেনি। যদিও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে এসেছেন ৮ হাজার ৩৯৬ জন। তাদের সবার বডি স্ক্রীনিং করেছে আইইডিসিআর। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। কারও শরীরে নতুন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি। শুক্রবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা জানান। তিনি আরও বলেন, উহান থেকে ফিরিয়ে আনা ৩১২ বাংলাদেশীর কারও মধ্যে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা না গেলেও সতর্কতা হিসেবে ওই ফ্লাইটের পাইলট ও ক্রুদেরও যার যার বাড়িতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এমনকি ওই ফ্লাইটের ডাক্তার ও বিমানকর্মীরাও হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাদের এখন বাইরে যাতায়াত না করার পরামর্শ দিয়েছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ত্রিশ হাজার। নোভেল করোনা ভাইরাসের কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে আপাতত নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হলো যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা এবং কিছু স্বাস্থ্য বিধি ও পরিচ্ছন্নতার নিয়ম মেনে চলা। এ ভাইরাস অন্যান্য দেশে ছড়াতে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করেছে। আরও কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশও গত ১ ফেব্রুয়ারি উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩১২ বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও গবেষককে ফিরিয়ে এনেছে। তাদের কারও মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের তথ্য পাওয়া না গেলেও সাবধানতার অংশ হিসেবে রাখা হয়েছে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে। তাদের আনতে চারজন চিকিৎসক, চারজন ককপিট ক্রু ও ১১ জন কেবিন ক্রুকে পাঠানো হয়েছিল বিমানের একটি উড়োজাহাজে করে। সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক, স্যানিটাইজার, ডিসপোজেবল গাউনসহ বিভিন্ন সরঞ্জামও তাদের সঙ্গে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু উহান ঘুরে এসেছেন বলে ওই ফ্লাইটের পাইলটরা আপাতত কয়েকটি দেশে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন না বলে গত ৩ মার্চ জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এই পরিস্থিতিতে অন্য কোন পাইলটকেও আর চীনে পাঠানোর ঝুঁকি নিতে পারছে না বাংলাদেশ। ফলে দেশে ফিরতে আগ্রহী ১৭১ বাংলাদেশীকে উহানেই অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, উহান ফেরত কারও মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোন লক্ষণ এখনও পাওয়া যায়নি। দেশে ফিরিয়ে আনা ৩১২ জনের মধ্যে ১১ জনের জ্বর থাকায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরীক্ষা শেষে কারও মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। চার পরিবারের ওই ১১ সদস্য এখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। বাকি ৩০১ জনকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাদের সবাই সুস্থ আছেন। দু সপ্তাহ পর তারাও ঘরে ফিরে যাবেন।