অনলাইন রিপোর্টার ॥ ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় চার বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই জনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া এবং এক জনের কমলগঞ্জ উপজেলায় এবং অপরজনের বাড়ি কোথায় তা জানা যায়নি।
গতকাল রবিবার কাজ শেষে বাইসাইকেলে করে বাসায় ফেরার পথে ওমানের আদম এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এবং ওমানে প্রবাসী নিহত লিয়াকতের শ্যালক জসিমউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের মুসলিম আলীর ছেলে লিয়াকত আলী (৩৫), শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের সবুর আলী (৩৩) ও কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া বাজারের টিলালাইন এলাকার আলম আহমেদ (৩৫)। অপরজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। নিহত আলম আহমেদের ছোট ভাই ওয়াসিম বলেন, আমার বড় ভাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার আশায় স্ত্রী ও ২ সন্তানকে রেখে ধার-দেনা করে ৬ মাস আগে ওমানে পাড়ি দেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্বচ্ছলতার পরিবর্তে আজ আমাদের পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেলো।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের লিয়াকত আলী (৩৫) মুসলিম আলীর ছেলে লিয়াকত প্রায় ৪ বৎসর আগে ওমান যান। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত সবার ছোট। তার স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সের এক সন্তান রয়েছে। কনস্ট্রাকশনের কাজ করে পরিবার চালাতেন তিনি। পাসপোর্ট নবায়ন করে দু’মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি, এখন কফিনবন্দি হয়ে স্বজনের কাছে ফিরবেন লিয়াকত। লিয়াকত আলীর চাচা মাসুদুর রহমান জানান, লিয়াকত সবার ছোট হলেও পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ছিল। ক’দিন পর দেশে আশার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে।
কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জরপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে সবুর আলী ১০ বছর ধরে ওমানে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছিলেন। দু’বছর আগে দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে আবার ওমান পাড়ি জমান। বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারে হাল ধরেন সবুর। মা, আট বোন, স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে রয়েছে তার। সবুর আলীর মামাতো ভাই কামাল খান বলেন, আমরা এলাকার অন্যান্য প্রবাসীদের মাধ্যমে জেনেছি সড়ক দুর্ঘটনায় সবুরসহ ৫ জন বাঙালি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাদের পরিবার একদম ভেঙে পড়েছে।
এদিকে ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার জানিয়েছেন, গতকাল বিকেলে ওমান থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে আদম জুবের এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি ২ জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কর্মকর্তা গেছেন। ফিঙ্গার প্রিন্ট থেকে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।